আব্দুল্লাহ আল-মামুন, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের চৌগাছার স্বরুপদাহে প্রতিপক্ষের ধারালো দা’র কোপে আয়ূব হোসেন খান (৬০) ও ইউনুছ আলী খান (৫৫) নামে দুই সহদর ভাই নিহত হয়েছে।

তারা উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের টেঙ্গুরপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান খানের ছেলে। এ ঘটনায় আয়ূব হোসেন খানের ছেলে আসাদুজ্জামান খান রনিকে (৩০) গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত বিপুল খান (৪০), তার ভাই মুকুল খান (৩৫), বিপুলের স্ত্রী বিলকিস (৩৫) এবং মা রিজিয়া বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

হত্যার কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ধারালো অস্ত্র একটি চাপাতি ও একটি দা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটার দিকে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের টেঙ্গুরপুর সরদার ব্রিকসের বিপরীতে মুকুল হোসেনের চা’য়ের দোকানে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ছোটভাই শেরআলী একই গ্রামের আফজাল খানের ছেলে বিল্লাল, বিপুল ও মুকুলরা আয়ূব হোসেন ও ইউনূছ আলীদের কাঠগোলা ও ক্ষেতে কাজ করতো।

হঠাৎ বিপুল কাজে যেতে না চাওয়ায় বৃহস্পতিবার তারাবীর নামাজ শেষে বাড়ি থেকে খেয়ে সরদার ব্রিকস পার হয়ে মুকুলের চায়ের দোকানে কাজে যেতে না চাওয়ায় সেখানে আয়ূব খানের সাথে বিপুলের কথা কাটাকাটি হয় এবং বিপুল আইয়ূব খানকে ঘুষি মারে।

তখন আয়ূব খান বাড়িতে গিয়ে ডেকে বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ তবুও বিপুল আমাকে মেরেছে। তোমাদের মেঝচাচা (ইউনূছ) ও ভাইকে (আসাদুজ্জামান) ডাকো।

এরপর তারা তিনজনই মুকুলের ওই চায়ের দোকানে যেয়ে অপমান করার কারণ জানতে চান। এসময় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকা মুকুল, বিপুল, বিল্লাল, তাদের স্ত্রীরা এবং তাদের বাবা আফজাল খান ও মা রিজিয়া বেগমরা মিলে আয়ূব খান, তার ভাই ইউনুছ খান এবং ছেলে আসাদুজ্জামান খান রনিকে চাপাতি ও দা দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে।

এতে ইউনূছ খানের দুটি হাত কব্জি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এবং মাথা ও শরিরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। মাথাসহ শরিরের বিভিন্নস্থানে আঘাত পেয়ে মারাত্মক আহত হয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা আয়ূব খান ও আসাদুজ্জামান খানকে পুলিশ দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়ূব হোসেন খানের মৃত্যু হয় এবং মাথায়, কাঁধে ও হাতে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অপারেশন শেষে তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ জানান, মরদেহ গুলো ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনায় জড়িত বিপুল ও মুকুলসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুুতি চলছে বলে জানান তিনি।