নিজস্ব প্রতিবেদক॥ মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে দুই বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার মানিকগঞ্জ থেকে যশোরে এনে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিহত শিশু রিহান’র দুলাভাই আবু বক্কর ফরিদকে (২২) আটক করা হয়েছে।

নিহত রিহান মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটাল গ্রামের ওমর বাবুর্চির ছেলে। আটক আবু বক্কর ফরিদ যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকার মীর সাইদুল ইসলামের ছেলে।

হাসপাতাল ও পুলিশ সুত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে আবু বক্কর ফরিদ তার দুই বছরের শ্যালক রিহানকে মুক্তিপণের দাবিতে মানিকগঞ্জ থেকে অপহরণ করে যশোরে নিয়ে আসেন। পথে শিশুটিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। এসময় শিশুটির কান্নার আওয়াজ মোবাইলে তার বাবা-মাকে শোনান ঘাতক ফরিদ। সকাল সোয়া ১১টার দিকে শিশুটির অবস্থা খারাপ হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. তাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অসুস্থ রেহানকে নিজ ছেলে পরিচয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন ফরিদ। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। রেহানের অন্ডকোষসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত দেখে হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকাদের সন্দেহ হয়। এসময় হাসপাতাল থেকে পুলিশে খবর দেয়া হলে ফরিদকে আটক করা হয়।
ওসি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটক ফরিদ তার বাড়ি যাত্রাবাড়ী জানালে সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, শ্বশুরালয়ে টাকা নিয়ে কোন্দলে সোমবার শিশু শ্যালককে অপহরণ করে আবু বকর ফরিদ। এ ঘটনায় তার শ্বশুর ওমর বাবুর্চি ওই দিনই যাত্রাবাড়ি থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। অপহরণের পর ওইদিন সন্ধ্যায় ঈগল পরিবহনের একটি বাসে করে শিশুটিকে নিয়ে যশোরের ঝিকরগাছায় বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন ফরিদ। কিন্তু যশোরে আসার পথে শিশুটির ওপর অমানবিক নির্যাতন করেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে যশোরে পৌঁছানোর পর শিশুটির মুমূর্ষ অবস্থা হয়। এ সময় যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্টে নেমে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করেন ফরিদ।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রশিদ জানান, হেড ইনজুরি হিসেবে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে জানতে পারেন শিশুটি মারা গেছে।
হাসপাতালের একজন সেবিকা জানান, সিঁড়ি থেকে পড়ে নিজ ছেলেটি আহত হয়েছে এই বলে শিশুটিকে ভর্তি করেন ওই যুবক।