নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ১৬ আগষ্ট২২ইং তারিখে খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনায় পৌর বিএনপি আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের হামলায় ৩০জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত এবং একজনের মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জানা গেছে, যশোরের বেনাপোল পৌর শাখার আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুলের নির্দেশেই ২০২২ সালের ১৬ই আগস্ট বেনাপোল বাজারস্থ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় পৌর বিএনপি আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।

উক্ত হামলায় বেনাপোল পৌর বিএনপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আব্দুল আলিম গুরুতর জখম হয়ে যশোরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত আব্দুল আলিম গাজীপুর গ্রামের মৃত ফারাজ আলী মোড়লের ছেলে। তৎসময়ে বিএনপির প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে আলিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পৌর বিএনপির দোয়া অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৩০জনের অধিক নেতা-কর্মী। ঐ হামলায় গুরুতর আহতহন দোয়া অনুষ্টান স্থলের ভবন মালিক মাসুদুর রহমান মিলন, মাকসুদুর রহমান রিন্টু ও সুমন। তখন প্রশাসনের অসহযোগিতায় বিএনপি আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে সরকারদলীয় পেটুয়া বাহিনীর বর্বর হামলাকান্ডের বিচার পাইনি ভূক্তভোগীরা।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশ জুড়ে আওয়ামী সরকারের আমলে গুম, খুন ও হামলার ঘটনায় নির্যাতিতরা বিচারের আশায় আইনের দারস্থ হচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৪ নং বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর বিএনপির অন্যতম নেতা মাসুদুর রহমান মিলনের উপর একাধিকবার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়ার খবর এলাকায় ছড়ালে হামলায় অংশ নেওয়া একাধিক ছাত্রলীগ নেতারা অপকর্মের ব্যাপারে মুখ খুলতে শুরু করেন।

ইতিমধ্যে মামলা হতে পরিত্রাণ পেতে বিএনপি নেতার দারস্থ হওয়া ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের কথোপোকথনের ১৫ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের একটি ওডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে সুস্পস্ট ভাবে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বলেন, বিএনপি নেতা শাহাবুদ্দিনের ইন্ধনে বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মুকুল হাজী তাদেরকে মিলন চেয়ারম্যানের অফিসে বিএনপির দোয়া অনুষ্ঠানে হামলা চালাতে বলেন। এমনকি হামলার পরপরই বিএনপি নেতা আলিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় বলে স্বীকার করেন। এ ঘটনায় রাসেল মোবাইলে বলেন হাজী মুকুল ও শাহাবুদ্দীনকে মামলার প্রধান আসামী করেন এবং আমরা নিজেরা রাজসাক্ষী দিতে সন্মত আছেন বলে শোনা যায়। এ বিষয়ে জানতে হাজী এনামুল হক মুকুলের মুঠো ফোনে কল দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যাইনি।

এ ব্যাপারে বেনাপোল পৌর বিএনপির নেতা শাহাবুদ্দিন আহমেদ এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আমাকে ফাঁসানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। এছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে আমিও গিয়েছিলাম।

তিনি আরও জানান অডিও ক্লিপটি আমি শুনেছি। এরপরে মুকুল হাজীর সাথে আমি কথা বলেছি। সে জানায় রাসেল তোমার ব্যাপারে যা বলেছে সম্পুর্ন মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কথা।

বিএনপি নেতা আলিমের মৃত্যু ঘটনা ও মাসুদুর রহমান মিলনের উপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের সত্যতা জানতে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) সুমন ভক্তের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত এ সংক্রান্তে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতনের স্বীকার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন আওয়ামীলীগের আমলে বহুবার অন্যায় ভাবে হামলা, মামলার স্বীকার হয়েছি তখন তো আপনারা লেখেননি। আলিম হত্যা নিয়েও আমি কথা তুলেছি বিচার পাইনি। আমার উপর হামলাকান্ডে যাহারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনগত প্রক্রিয়ায় শাস্তির আওতায় আনবো।