ঝিকরগাছা প্রতিনিধি : যশোরের ঝিকরগাছায় দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক, ঝিকরগাছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন তার ভবনের তিন তলার রান্নাঘর থেকে দুইটি বিষধর গোখরা সাপ মেরেছেন। সরকারের স্নেক রেস্কিউ টিম এর সদস্যদের কাছে সহযোগিতা চেয়েও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (২৮ জুন) রাত নয়টার দিকে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা সেতু সংলগ্ন নিজস্ব বাড়ি এস এম গার্ডেন থেকে সাপ দুইটি মারা হয়। এঘটনায় ওই ভবনসহ আশেপাশের ভবনগুলোতে আতংক বিরাজ করছে।

ভবনের মালিক সাংবাদিক উপাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দীন জানান, ওই ভবনের তৃতীয় তলায় তিনি স্বপরিবারে বসবাস করেন। সন্ধ্যায় তার ছোট মেয়ে রান্নাঘরে দুধ রাখার পাত্র আনতে গেলে একটি সাপ দেখতে পায়। পরে পরিবারের অন্য সদস্যদের বিষয়টি জানালে তারা প্রথমে বিষয়টি পাত্তা দেয়নি। তাদের ধারণা তিন তলায় সাপ থাকা অসম্ভব। পরে তিনি মেয়ের ভীতির কারণে রান্নাঘরে গিয়ে সাপের অস্তিত্ব টের পান।

ইলিয়াস উদ্দীন বলেন, প্রতিবেশি কয়েকজনকে ডেকে রান্নাঘরের তাকের জিনিষপত্রের মধ্যে প্রথমে একটি সাপ পেয়ে সেটিকে মেরে ফেলি। সেই সাপের ছবি বন সংরক্ষন অফিসে পাঠালে এক কর্মকর্তা জানান এটি গোখরা জাতীয় বিষধর সাপ। পরে সন্দেহবশত রান্নাঘরে খুঁজলে আরো একটি সাপ পাওয়া যায়। পরে সেটিকেও মেরে ফেলা হয়। এই ঘটনায় পুরো বাড়ি জুড়ে ভীতি কাজ করছে। সবাই রান্নাঘরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাপের অস্তিত্ব টের পাওয়ার পরে সরকারি স্নেক রেসকিউ টিম কে খবর দিলেও কোন সহায়তা পাওয়া যায়নি। তারা জানান, যশোরে এ ধরণের কোন টিম নেই। খুলনা অফিসে যোগাযোগ করলেও দূরত্বের কারণে তারা সহযোগীতা করতে অস্বীকার করেন। পরে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্বার্শবর্তী শার্শা উপজেলা বন সংরক্ষণ অফিসে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তারাও রাতে সহযোগীতা করতে পারবেন না বলে জানান, তবে অপেক্ষা পরদিন দিনের আলোয় বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। উপায়ন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়েই হাতে মোটা বস্ত্র পেচিয়ে সাপ খুঁজে দুটো সাপই মেরে ফেলেন।

শার্শা বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ কিপার মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, ভুক্তভোগী ওই পরিবার থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু আমাদের কোন সাপ বিশেষজ্ঞ নেই। তবে সাপের ছবি দেখে মনে হয়েছে এটা গোখরা প্রজাতির বিষধর সাপ।

এদিকে বর্তমানে রাসেল ভাইপার সহ বিষধর সাপের কামড়ে বিভিন্ন জায়গায় মানুষ মারা যাওয়ার সংবাদে জনমনে আতংক বিরাজ করছে। এরই মধ্যে একজন স্বনামধন্য সাংবাদিক এর বাড়িতে সাপের উপস্থিতি এবং সেই সাপ উদ্ধারে সরকারের কোনো দফতর এর সহযোগিতা না পাওয়ার ঘটনায় জনমনে আরও ভীতির সঞ্চার হয়েছে।