খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, ঝিনাইদহ | তারিখঃ জুন ৯, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2859 বার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : মোস্তাক শিকাদার নামে এক আ’লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে রোববার দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকুপ থানায় হামলা করা হয়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে কয়েক’শ সমর্থক জোটবদ্ধ হয়ে থানার প্রধান ফটক দিয়ে থানার মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং আতর্কিত ভাবে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
এ সময় হামলাকারীর সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। ১০ মিনিটের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল সোহান হোসেন, আব্দুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও তরিকুল ইসলাম গুরুতর আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের শৈলকুপা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বর্তি করা হয়েছে।
এদিকে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়লে আনুমানিক ২০/২৫ জন হামলাকারী আহত হন। আহতদের মধ্যে হাসানুজ্জামান, সাত্তার শিকদার, সাইফুদ্দীন, সোনা মিয়া, জালাল উদ্দীন, আব্দুল ওহাব, ইমরান, ফারুক হোসেন, তুহিন, নাফিজ, সালামত, ইমন, এস এম রিয়াজুল, মুইম, জান্নাত হোসেন, আসাদুজ্জামান, ইমন শিকদার, ফিরোজ শিকদার, আলী আকবর, বায়োজিদ হোসেন. আজগার মন্ডল ও হারুন শিকদারের নাম পাওয়া গেছে। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সবাই নবনির্বাচিত শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্তফা আরিফ রেজা মননু ও সংসদের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী নায়েব আলী জোয়ারদার এমপির সমর্থক।
শৈলকুপা থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, একটি মারামারি মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক শিকাদারকে আজ (৯ জুন) রোববার দুপুরে ধাওড়া থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এর কিছুক্ষন পরই মোস্তাক শিকদারের কয়েক’শ সমর্থক তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বাধ্য হয়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। এ সময় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
শৈলকুপা উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান রিংকু অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের উপর বেআইনী ও অন্যায়ভাবে হামলা করেছে। পুলিশের গুলিতে ৩০/৩৫ জন আহত হওয়ার দাবীও করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইমরান জাকারিয়া জানান, এজাহার নামীয় আসামী মোস্তাক শিকদারকে রোববার দুপুরে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পরপরই আসামীর পক্ষে কয়ে’শ উৎশৃংখল জনতা তাকে ছাড়িয়ে নিতে জোটবদ্ধ ভাবে থানায় হামলা চালায়। এ সময় তারা থানার প্রধান ফটক খুলে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের বাঁধা দিলে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশ নিজেদের জানমাল ও সরকারী সম্পদ রক্ষায় বাধ্য হয়ে সটগানের গুলি ছোড়ে। তবে পুলিশ কত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে তা তাৎক্ষনিকভাবে তিনি জানাতে পারেননি। এদিকে গত শুক্রবার স্থানীয় এমপি নায়েব আলী জোয়ারদার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মননুর উপস্থিতিতে শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আযম থানার ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে গলায় গামচা পেঁচিয়ে থানা থেকে বিতাড়ন করার হুমকী দেন। তার এই হুমকীর দুইদিন পর থানায় এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
এ ব্যাপারে শৈলকুপার সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলীর বক্তব্য জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। শৈলকুপার বেশির ভাগ নেতার এ ঘটনার পর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।