স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসদরে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে তার শশুর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঝিকরগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে। তিনি কৃষ্ণনগর ৪নং ওয়ার্ডের মৃত জফর আলী খাঁ এর ছেলে। আর নির্যাতিত গৃহবধূ তার আপন ভাগ্নের বৌ বাঁকড়া রায়পটন গ্রামের আব্দুল জলিলের কন্যা শ্রাবণী খাতুন(২৫)।

ঘটনার সুত্রে জানা যায় কৃষ্ণনগর ৪নং ওয়ার্ডের শাহাদাত হোসেনের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী ওবায়দুলের সাথে ৭ বছর পূর্বে শ্রাবণীর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকমাস পরেই ওবায়দুল আবারও মালয়েশিয়া চলে যায়। কিছুদিন পর শ্রাবণীর কোল আলো করে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু সেই সন্তানকে তার পিতার মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত করেছে ওবায়দুল এর আপন মামা কাউন্সিলর আবদুল আলিম ও তার মা জাহানারা বেগম। ওবায়দুল বিদেশে যাওয়ার পরপরই আলিম ও জাহানারা দুই ভাইবোন মিলে ষড়যন্ত্র করে শ্রাবণীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে। মেয়ের সুখের জন্য শ্রাবণীর পিতা আব্দুল জলিল মেয়ের ঘরের সকল ফার্ণিচার কিনে দেওয়া, বাড়ি করতে টাকা দেওয়াসহ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করেন কিন্তু তারপরও মেয়েকে বাড়ি থেকে তাড়াতে তার শাশুড়ী ও মামা শ্বশুর ঝিকরগাছা থানায় টাকা চুরির মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সেই সময় ঝিকরগাছা থানার এস আই সিরাজুল ইসলাম সিরাজ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা না পেয়ে শ্রাবণীকে শশুর বাড়িতে রাখতে বলেন। কিন্তু আব্দুল আলিমের বাধার কারণে শ্রাবণী সেখানে উঠতে পারেনি।

দীর্ঘ ৬ বছর পর কয়েকদিন আগে ওবায়দুল মালয়েশিয়া থেকে বাড়িতে আসে। এই খবর শুনে ৬বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতীকে নিয়ে শ্রাবণী শশুর বাড়িতে গেলে আব্দুল আলিম ও তার বোন জাহানারা তাকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং পরবর্তীতে ঐ বাড়ি পা দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এখানেই শেষ নয়। ঐদিন শ্রাবণীর সাথে একই এলাকার কিছু মহিলা সেই বাড়িতে গিয়েছিল। পরবর্তীতে আব্দুল আলিম সেই সব মহিলাদের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকেও দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে এসেছে। এ নিয়ে সবার মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে শ্রাবণী বলেন আমার বিয়ে হয়েছে ৭ বছর। আমার শাশুড়ী আর মামা শশুরের প্ররোচনায় আমার স্বামী কোনো খোঁজখবর নেয়না। আমার মেয়ের মুখটা পর্যন্ত দেখতে দেয়নি তাকে। সে আমাদের ভরনপোষণও দেয়না। বিয়ের পর থেকে বাপের বাড়িতেই আছি। স্বামী আসার খবরে শশুর বাড়ি গিয়েছিলাম কিন্তু আমার মামা শশুর ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় আব্দুল আলিম একজন মাদক ব্যবসায়ী। ইতোপূর্বে তিনি ফেনসিডিলসহ আটক হয়েছেন এবং জেল খেটেছেন। বর্তমানে তার নামে দুইটি মামলা আছে। এর মধ্যে একটি মাদক দ্রব্য আইনে মামলা নং ৫, তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৫ এবং আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা নং ২১, তারিখ ১০ জুন ২০১৪।

ঘটনার বিষয়ে জানতে আব্দুল আলিমের মোবাইলে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।