খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, মাগুরা | তারিখঃ জুন ৬, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 4857 বার
শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি :মাগুরার শালিখায় বোরো ধান কাটার ভরা মৌসুমে কম্বাইন হারভেস্টার এর অভাবে ধান কাটা ব্যাহত হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে উপজেলার ভর্তুকির ধান কাটার কৃষি যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার অন্যত্র বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫০% ভর্তুকিতে কেনা উপজেলার কৃষি অফিস থেকে ৪টি কম্বাইন হারভেস্টার অন্য জেলায় গোপনে বিক্রি হয়ে গেছে।
এসব ধান কাটার কৃষি যন্ত্র নিজ নিজ এলাকার কোথাও নেই। যদিও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এসব কম্বাইন হারভেস্টার এ উপজেলায় কার্যরত রয়েছে বলে দেখানো হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ কম্বাইন হারভেস্টার বেচাকেনায় কৃষি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জড়িত রয়েছে। তাদের যোগসাজসেই তালিকায় এখনো এসব কৃষি যন্ত্রের উপস্থিতি দেখানো হচ্ছে। তবে মাঠ পর্যায়ে সেগুলোর কোন হদিস নেই। শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর ও তার ভাইয়ের নামে একটি কম্বাইন হারভেস্টার বরাদ্দ হয়। ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর তার কম্বাইন হারভেস্টার দিনাজপুর জেলায় ভাড়ায় চলছে বলে সাংবাদিকদের জানান, তবে এখনো শালিখায় কম্বাইন হারভেস্টারের তালিকায় তার নাম রয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মেম্বার জাহাঙ্গীর নিজেই। তিনি জানান কৃষি অফিস থেকে আমি একটি কম্বাইন হারভেস্টার সরকারের দেয়া ১৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ভর্তুকিতে মোট ৩১ লক্ষ টাকায় কিনেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শুধু জাহাঙ্গীর মেম্বার নয় এ তালিকার কারও বাড়িতে কম্বাইন হারভেস্টার নেই। ভর্তুকির এ ধান কাটার যন্ত্র লাখ লাখ টাকা লাভে অন্য জেলায় বিক্রি করা হয়েছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। এমন তুঘলকি কাজের সঙ্গে কৃষি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বসাংধা গ্রামের জমজম মোল্যা বলেন,আমরা একই পরিবারের তিনজনের নামে তিনটা ধানকাটা মেশিন তিন অর্থ বছরে নিয়েছি৷ মেশিনগুলো বিক্রি করিনি, দিনাজপুরে ভাড়াই চালানো হচ্ছে৷
চুকিনগর গ্রামের কৃষক উদ্যোপ মন্ডল জানান,শুনেছি সরকার কৃষকদের শালিখায় ধানকাটা মেশিন দিছে কিন্তু আজ পর্যন্ত দেখেনি৷
সমাজ সেবক মোঃ তুহিন ইসলাম বলেন, শালিখা উপজেলায় যে ধান কাটা মেশিন সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে তা আমি উপজেলার কোন এলাকার মাঠে দেখিনি৷ তবে আমার মনে হয় এই মেশিনগুলো নিয়ে নয় ছয় হয়েছে৷ বিষয়টি নিয়ে আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি৷
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি নিয়ন্ত করনের প্রকল্পের আওতায় শালিখা উপজেলায় ৫টি কম্বাইন হারভেস্টার বরাদ্দ হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে চারটি কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ করেছি।
এ কম্বাইন হারভেস্টারগুলো এমন সময় বিতরন করেছি যখন শালিখা উপজেলায় ধান কর্তন শেষ হয়েছে। সমন্বিত প্রকল্পের অনুমতি সাপেক্ষে সেগুলো অন্য জেলায় ব্যবহার করার অনুমতি থাকলেও মেশিন ব্যবহারকারীরা আমার কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয় নাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরেকৃষ্ণ অধিকারী জানান, এই এলাকার চাষীরা যেন আধুনিক কৃষিতে সম্পৃক্ত হয় সেজন্য কৃষি অধিদপ্তরের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটা কম্বাইন হারভেস্টার ৫০ভাগ ভর্তুকিতে দেওয়া হয়েছে। এটা শালিখাতে ব্যবহার হবে। এর ব্যর্তয় ঘটেছে কিনা আমার জানা নাই। আর যদি কিছু ঘটে সেটা আমরা খতিয়ে দেখব ও এর যথাযথ ব্যবস্থা নেব।