এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা : ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা বিরাজ করছে উপকূলের চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষিদের মধ্যে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে ওই এলাকার মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। জোয়ারের পানির তোড়ে জেলার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চিন্তিত তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ৩০টিরও অধিক পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের অগ্রভাগ সকাল থেকে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে ঢুকেছে। বর্তমানে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

তিনি বলেন, এ সময় উপকূলীয় নদীতে ৮-১২ ফিট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৯০-১২০ কিলোমিটার। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক, সিপিবি, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে।

জেলাজুড়ে প্রস্তুত করা হয়েছে ৮৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ও দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো পর্যন্ত কাউকে যেতে দেখা যায়নি। তবে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে মানুষরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন জানান, ৩৮০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট মেরামত করা হয়েছে। এ ছাড়া যদি বাঁধের ভাঙন দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক মেরামতের জন্য জিও ব্যাগ মজুত রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর থেকে প্রচার-প্রচারণা লক্ষ করা গেছে। আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন উপকূলের কৃষি ও চিংড়ি, কাঁকড়া চাষিরা। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা করছেন তারা।সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।