সারাবিশ্ব | তারিখঃ মার্চ ২৪, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3542 বার
সারাবিশ্ব ডেস্ক : আগামী মাসে ভারতের জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। দেশজুড়ে চলছে জোর নির্বাচনী প্রচার। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারের এই ডামাডোলের মধ্যেই ভারতের একটি আদালত দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা নিষিদ্ধ করেছে।
শুক্রবার উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট এ রায় দেয়। এর মধ্য দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির আমলে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে নেয়া নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো একটি বিতর্তিক সিদ্ধান্ত মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়া হলো।
ইসলাম ভিত্তিক স্কুল কার্যক্রম হচ্ছে মাদ্রাসা। যেখানে মূলত ইসলাম শিক্ষা দেয়া হয় এবং তার পাশপাশি জাতীয় কারিকুলামে থাকা পাঠ্যবইও পড়ানো হয়।
শুক্রবারের রায়ে উত্তর প্রদেশের মাদ্রাসা পরিচালনাকারী আইন-২০০৪ বাতিল করা হয়। বলা হয়, ‘এই আইন ভারতের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থি।’
রায়ে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা শিক্ষার্থীদের প্রচলিত স্কুলগুলোতে শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাঠানোর কথাও বলা হয়েছে।
এলাহাবাদ হাই কোর্টের এই রায় ২৭ লাখ শিক্ষার্থী এবং ২৫ হাজার মাদ্রাসার প্রায় ১ লাখ শিক্ষকের জীবনে গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ।
ভারতে মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ মুসলমান। শুক্রবারের রায়ে বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী এবং বিবেক চৌধুরি বলেন, ‘রাজ্য সরকার এটাও নিশ্চিত করবে যে রাজ্যের ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী কোনো শিশু যেনো যথাযথভাবে স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থেকে বাদ পড়ে না যায়।’
অংশুমান সিং রাঠোর নামে একজন আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে এলাহাবাদ হাই কোর্ট মাদ্রাসা নিষিদ্ধের এই রায় দেয়।
আংশুমান সিং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কিনা বা তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে বা তাদের মতাদর্শে উৎসাহিত হয়ে হাই কোর্টে এই আবেদন করেছেন কিনা জানতে রয়টার্স থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় থাকা বিজেপির মুখপাত্র রাকেশ ত্রিপাঠী রয়টার্সকে বলেন, রাজ্য সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে নয়। বরং তারা মুসলমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন।
‘আমরা কোনো মাদ্রাসার বিরুদ্ধে নই। কিন্তু আমরা ভেদাভেদের যে অনুশীলন চলে তার বিরুদ্ধে। আমরা অবৈধ অর্থায়নের বিরুদ্ধে এবং আদালতের নির্দেশ অনুসরণ করে রাজ্য সরকার এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’
আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে ভারতে জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। চলবে ১ জুন পর্যন্ত। ভোটের ফলাফল ঘোষণা হবে আগামী ৪ জুন।
সাত ধাপের এই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ৯৭ কোটি নিবন্ধিত ভোটার ভোট দেবেন।
ভারতে টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছে নরেন্দ্র মোদী। জনমন জরিপে এবারও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালিয়েন্স (এনডিএ) এর সহজ জয়ের পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।