মণিরামপুর অফিস : জাহান আলী (৪৫)। এক সময়ে যশোরের রাজগঞ্জের খুব সুনামধন্য ফুটবলার ছিলো। যেখানেই খেলা করতে যেতো, সেখানেই রাজগঞ্জ ফুটবল একাদশের মুখ উজ্জল করতো জাহান আলী। জাহান আলী যখন রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতো। তখন রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ইন্টারস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় সব সময় ইউনিয়ন থেকে উপজেলা, উপজেলা থেকে জেলা পর্যন্ত প্রথম স্থানে থাকতো, শুধু জাহান আলীর অত্যন্ত দুর-দর্শিতায়। জাহান আলীর ডাক পড়তো জেলা-উপজেলার বিভিন্ন ম্যাচে ফুটবল খেলার জন্য। কিন্তু লেখাপড়া আর খেলাধুলা বেশিদুর এগুতে পারেনি। দারিদ্রতার কাছে হার মেনেছে সে। রাজগঞ্জের সেই নামকরা ফুটবলার জাহান আলী এখন রাজগঞ্জ ভাসমান সেতুর প্রবেশ মুখে (বাসস্টান্ডে) একটি ভ্যানগাড়ীর উপর ঝাঁলমুড়ি আর মসলা মেশানো পেঁয়ারা বিক্রি করে দীনযাপন করছেন। কথা হয় জাহান আলীর সাথে। তিনি বলেন, যখন ফুটবল খেলা করতাম, তখন খেলা দেখে লোকে বাহবা দিতো। বলতো জাহান আলী একদিন খুব বড় ফুটবলার হবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মাম পরিহাস। বেশিদুর এগুতে পারিনি। এখন স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে সংসার জীবনে হাবুডুবু খাচ্ছি। দ্রুব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে নুন আনতে পান্তা ফুরাচ্ছে। অল্প আয়, আর ব্যয় বেশি। কিছুতেই সামাল দিতে পারছি না। ছেলে রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আর মেয়ে একই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তাদের পড়াশোনার খরচ সময়মত জোগাড় করা সম্ভব হয় না। চাহিদামত পোশাক, খাবার দিতে পারিনা। এজন্য নিজেকে দায়ীকরি। কারণ আমার সংসারের ঘানি, আমাকেই টানতে হবে। তা পারি না এজন্যে। তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন ঝাঁলমুড়ি আর মসলা মেশানো পেঁয়ারা বিক্রি করে এক শ’-দেড় শ’ টাকা আয় হয়। এই আয় দিয়ে সংসার চলে না। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার, বাচ্ছাদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি। জাহান আলী অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছে।