আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ হরিণাকুন্ডু উপজেলার তেলটুপি গ্রাম থেকে নিখোঁজ যুবক ছয়ফলের লাশ উদ্ধারের পর তার মৃত্যু রহস্য উদ্ধারে মাঠে নেমেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধারণা করছে জমি বিক্রির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

বুধবার মধ্যরাতে হোসেনের গলিত লাশ কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের বদ্দিনাথপুর গ্রামের শ্মাশান ঘাট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ছয়ফল ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার তেলটুপি গ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ মনিরুল ইসলাম ও মজনু নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ ও গ্রামবাসি জানায়, গ্রেফতারকৃত মনিরুল ছয়ফলের বাড়িতে কামলার কাজ করতো। নিখোঁজের দিন ছয়ফল ১৪ শতক জমি বিক্রি করেন। মনিরুল এই টাকা লেনদেনের কথা জানতো। ছয়ফল বাড়ি ফেরার আগেই ঘাতক মনিরুল মোবাইলে তাকে কৌশলে ঝাউদিয়া বাজারে ডেকে নেয়। তার ধারণা ছিল ছয়ফলের কাছে জমি বিক্রির টাকা ছিল। তারপর থেকেই নিখোঁজ হন ছয়ফল।

হরিণাকুন্ডু থানার ওসি জিয়াউর রহমান জানান গ্রেওফতারকৃত মনিরুলের বাড়ি কুষ্টিয়ার ইবি থনার আস্তানগর গ্রামে। অন্যদিকে মজনুর বাড়ি একই উপজেলার ক্ষুদ্র আইলচারা গ্রামে। তারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তেলটুপি গ্রামের আলাল উদ্দীন জানান, নিহত ছয়ফল হোসেন কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক দল করতেন না। সাধারণ কৃষক ছিলেন। ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া বাজারে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন। সেই থেকে আগে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় ১৭ নভেম্বর তার ভাই নয়ফল হোসেন থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। জিডির সুত্র ধরে হরিণাকুন্ডু থানার পুলিশ বুধবার রাতে ছয়ফলের লাশের সন্ধান পান। তিনি আরো জানান, জমি বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিতেই তারই বাড়ির কাজের লোক মনিরুল তাকে হত্যা করেছে বলে গ্রামবাসি মনে করছে।

হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মো. জিয়াউর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল সেটের সুত্র ধরে কুষ্টিয়ার বদ্দিনাথপুর শ্মশান থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে ছয়ফলের লাশ তেলটুপি গ্রামে পৌছালে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। স্বজনরা শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিল। রাতে পারিবারিক গোরস্থাণে তার লাশ দাফন করা হয়।