এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা ঃ সাতক্ষীরা শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত প্রাণ সায়র খাল দখল দূষণ বন্ধে এবং খালের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানবন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ (বেলা), সুন্দরবন ফাউন্ডেশন এবং বেলা নেটওয়ার্কের আয়োজনে উক্ত মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।
জলবায়ু পরিষদ সাতক্ষীরার সদস্য সচিব আশেক ই এলাহীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রাণ সায়র খাল সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল। এ সময় বক্তব্য রাখেন, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যনার্জি, স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, বেগম মরিয়ম মান্নান, লুইস রানা গাইন, ফরিদা আক্তার বিউটি, খুরশিদ জাহান শীলা, আব্দুস সামাদ, শাম্মী আক্তার কুমকুম প্রমুখ।
সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ আফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, ১৮৫০ সালের দিকে সাতক্ষীরার জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা ও শহরের শ্রীবৃদ্ধির জন্য একটি খাল খনন করেন। মরিচ্চাপ নদের সঙ্গে বেতনা নদীর সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য এ খালটি খনন করা হয়। এল্লারচর থেকে খেজুরডাঙ্গী পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার লম্বা খনন করা খালটি প্রাণনাথ রায় চৌধুরীর নাম অনুসারে প্রাণসায়ের খাল হিসেবে পরিচিতি পায়। খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এ খাল। এর মাধ্যমে সহজ হয়ে উঠেছিল জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগও। কিন্তু খালটি দখল দূষনের কারনে প্রায় মৃত হয়ে গেলে সরকার ১০ কোটি ১৩লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার এল্লারচর থেকে খেজুরডাঙ্গী পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার খাল খনন শুরু করে। নকশা অনুযায়ী খালের উপরিভাগের প্রস্থ হতে হবে ৭৫ থেকে ৮০ ফুট। গভীরতা ৬ থেকে ৮ ফুট ও তলদেশের প্রস্থ হবে ২৫ ফুট। খনন শেষ করার আগে অনেক স্থানের পাড় ধসে পড়ে। টাকা ব্যয় হলেও সাতক্ষীরাবাসীর চাওয়া পূর্ণ হয়নি। খননের মাত্র কয়েকমাস পর থেকে আবারো পূর্বের ন্যয় দখল ও দুষনে ভরাট হতে থাকে খালটি। খালটিতে পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে দুই মুখ বাধ ও স্লুইজ গেট অপসারন করতে হবে। যাতে আবারো প্রাণ সায়র খাল প্রাণ ফিরে পায়। অবিলম্বে বক্তারা খালটি অবৈধ দখল ও দুষণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।