খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, ঝিনাইদহ | তারিখঃ নভেম্বর ২০, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1557 বার
আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ইজিবাইক কেরার জন্য লতিফুল আলম নামে এক ব্যক্তি সুদখোরদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন ৮০ হাজার টাকা। ছয় বছর ধরে শোধ করেছিলেন ৩ লাখ টাকা।
সুদাসল শোধ না হওয়ায় কথিত মাতব্বরদের মাধ্যমে আরো দুই লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এ ভাবে টাকা দিতে দিতে লতিফুল এখন নিঃস্ব। নিজের যা ছিল সব হারিয়ে এখন ভিটেবাড়িও এক সুদখোর জাল দলিল করে রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছেন। লতিফুল আলম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ফয়লা হাসপাতাল পাড়ার খোরশেদ আলমের ছেলে।
সোমবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন। স্ত্রী জবা বানু ও শিশু সন্তান মাহমুদুল হাসান মাহিনকে সঙ্গে নিয়ে লতিফুল অভিযোগ করেন, ২০১২ সালে তিনি আনোয়ার হোসেন নামে তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ইজিবাইক কেনার জন্য ৮০ হাজার টাকা নেন। শর্ত ছিল প্রতি মাসে তাকে ৫ হাজার টাকা করে সুদ দিতে হবে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি সুদের কিস্তি চালিয়ে যান। এরপর তার পিতা দুরারোগ্য ব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে আর কিস্তি দিতে পারেনি।
এদিকে লতিফুল আলমের সৎ মামা মতিয়ার রহমান তার কাছ থেকে বিশেষ প্রয়োজনে একটি চেক বইয়ের বøাঙ্ক পাতা নিয়ে নেন। কিছুদিন পর জানতে পারেন তার নামে আদালতে ৮ লাখ টাকার দাবীতে দুইটি মামলা হয়েছে। মতিয়ার রহমান চেকটি নিয়ে তার সুদখোর ভাই আনোয়ার হোসেনকে দেন। এই চেক নিয়ে আনোয়ার হোসেন ও তার ভাইপো জিয়ারুল ইসলাম লতিফুলের নামে চেক ডিজঅনারের মামলা করেন। এদিকে আদালতের মামলা মেটাতে লতিফুল আলম আরেক সুদখোর ও জমির দালাল আব্দুল ওহাবের দারস্থ হন। তার কাছ থেকে তিনি তার ভিটেবাড়ি ২৪ লাখ টাকায় বিক্রি করার শর্তে আবার ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা বন্দকী সুত্রে নেন। এ ভাবে চলতে চলতে এক সময় জানতে পারেন ২৯ নং ফয়লা মৌজার ৭০১ নং খতিয়ানভুক্ত আরএস ৪৫৪৭ নং দাগের ভিটেবাড়ি রেজিষ্ট্রি হয়ে গেছে। অথচ তিনি কোনদিন কালীগঞ্জ রেজিষ্ট্রি অফিসে যাননি। কালীগঞ্জের পাইকপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল ওহাব প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টম্বর লতিফুলের ভিটেবাড়ি রেজিষ্ট্রি করে নেন, যার দলিল নং ৫৫৫২।
এদিকে ভিটেবাড়ি হারিয়ে স্ত্রী ও শিশু সন্তান নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন লতিফুল। সুদখোর আনোয়ার, ভুমিদস্যু আব্দুল ওহাব ও তাদের নিয়োজিত লাঠিয়াল আহসানুল্লাহ হাসান এবং সবুজ প্রতিনিয়ত তাদের হুমকী দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। লতিফুল ন্যায় বিচারের জন্য কালীগঞ্জের জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিলেও প্রতিকার পাননি বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান।