এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের দৌলতপুরের সরকারী খাল থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজিং মেশিন (বলগেট) দিয়ে ভুগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের হয়রানীর উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত্যু জিউফার সরদারের পুত্র আইয়ুব আলী ও তার সহযোগী সদর উপজেলার দেবনগর গ্রামের মৃত্যু আকবর আলীর পুত্র আবু সাঈদ।

সূত্রে জানাযায় বিশিষ্ট বালু খাদক তার ব্যাবসায়িক সহযোগী ড্রেজার মেশিন (বলগেট) দিয়ে ভূগর্ভস্থ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তলন করে জেলার বিভিন্ন স্থানে বালু খাদক নামে পরিচিতি লাভ করে। উল্লেখ্য, গত ১১ই সেপ্টেম্বর ধুলিহর ইউনিয়নের দৌলতপুর নামক স্থানে কাশিনাথপুর খালে বসতবাড়ীর ৩০ ফুটের মধ্যে থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে যায় বিভিন্ন পত্রিকার পাঁচজন সাংবাদিক। তারা যেয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিষয় টি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করলে তিনি তাৎক্ষনিক ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা অবৈধ এই ড্রেজার মেশিন (বলগেট) জব্দ করতে বলেন। পরের দিন ১২সেপ্টেম্বর একাধিক জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন পোর্টালে মেশিন জব্দ হওয়ার নিউজ প্রকাশ হয়। এ নিয়ে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন স্থানীয় জনগণ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বালু দস্যু আইয়ুব আলী ও তার সহযোগীরা ০৫ জন কর্মরত সাংবাদিকের মধ্যে দুইজনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছে। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে সাজানো অভিযোগে দুই সাংবাদকর্মীকে আসামী করায় সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লিখিত অভিযোগ সুত্রে, জানা যায় দৈনিক বর্তমান, দৈনিক নবচেতনা ও দি ডেইলি ট্রাইব্যুনাল পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি শেখ হাসান গফুর, স্থানীয় দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকার প্রতিনিধি মোঃ মুজাহিদ সহ অজ্ঞাত নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির প্রসঙ্গ এনে সাতক্ষীরা সদর থানায় গত ১৭ ই সেপ্টেম্বর অভিযোগ করা হয়। রহস্যময় এই অভিযোগের বাদী উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের আইয়ুব আলী সরদার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, আসামিদ্বয় তার কর্মস্থলে ট্রলার যোগে নদী পথে বালু মহল থেকে ক্রয়কৃত বালু ব্ক্রিীতে তাহার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। গল্প কাহিনি এখানেই শেষ নয়..!! কাকডাকা ভোরের দিগন্ত ময় সূর্যের আলোতে ভৌতিক স্বাক্ষীদের সম্মুখে আসামি দ্বয় রাষ্ট্রদ্রোহী নাশকতা মামলার আসামি আইয়ুব আলীর ঘরের তালা ভেঙে নগত টাকা সহ তার স্ত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান। ঘটনার সত্যতা অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কর্মীর নিকট ২নং স্বাক্ষী- আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র আলমগীর হোসেনের স্বীকারোক্তি মূলক অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরে অভিযোগের রহস্য জানতে চাইলে বালু খাদক বলেন, অসুস্থতার জন্য এতোদিন পরে অভিযোগ করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

বাদী আরো উল্লেখ করেন যা করেছেন তিনি অন্য একজনের ইন্ধনে কাজ করেছেন। কিন্তু অসুস্থতার অজুহাতে প্রায় এক সপ্তাহ পর অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আলোচনার। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অভিযোগ। মূলত দুই সাংবাদিক হয়রানি করতেই এ অভিযোগ দায়ের। দৈনিক ঢাকার ডাক পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি তৌফিক উজ্জামান লিটু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন কারণে শত্রুতা সৃষ্টি হতে পারে, এর জের ধরে প্রকৃত ঘটনা না দেখিয়ে সাজানো মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ সংবাদ কর্মীদ্বয় কে আসামী করে হয়রানি করা অত্যন্ত কষ্ট দায়ক। সাতক্ষীরা কদমতলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম বাবলু বলেন, সাংবাদিক শেখ হাসান গফুর ও মোঃ মুজাহিদ দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সাথে সাংবাদিকতা পেশায় কাজ করে যাচ্ছেন। সাংবাদিক দের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যে অভিযোগ আমাকে হতাশ করেছে। আমি আশাবাদী তারা ন্যায় বিচার পাবে। সাংবাদিক শেখ হাসান গফুর জানান, আমাকে হয়রানির করার জন্য এমন হাস্যকর মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হয়েছে। আশাকরি আমি ন্যায়বিচার পাব। এব্যাপারে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোঃ মুজাহিদ গত ২৪ শে সেপ্টেম্বর আইয়ুব আলী, আবু সাঈদ সহ ৫জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম জানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।