জাহাঙ্গীর আলম ॥ উজ্জীবীত মানুষেরা আজ নেমেছেন খুলনা বিভাগের পথে পথে। তারা শামিল হচ্ছেন বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিএনপি আহূত খুলনা বিভাগীয় রোড মার্চে। সকাল ১০ টায় ঝিনাইদহ জেলা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রোড মার্চ উদ্বোধন করবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা ও যশোর হয়ে রোড মার্চ খুলনা যাবে। পথিমধ্যে যশোর জেলা বিএনপি, বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপি এবং অভয়নগর উপজেলা বিএনপির পথসভা অনুষ্ঠিত হবে।

যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন জানান, যশোর-মাগুরা সড়কের পাশে পুলেরহাটে বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই পথসভা শেষে রোড মার্চ যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। সেটি খাজুরা বাসস্ট্যান্ড হয়ে ঢাকা রোড দিয়ে মুড়ুলী গিয়ে জেলা বিএনপির পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। পথসভা শেষে নওয়াপাড়া বাজারে অভয়নগর উপজেলা বিএনপির একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই পথ সভা শেষে রোড মার্চের গাড়িবহর খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। ১৬০ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে খুলনা শহরের সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচি।

সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম।

দেলোয়ার হোসেন খোকন আরও জানান,রোর্ড মার্চ যশোরে পৌঁছানোর আগে থেকেই রাস্তা দুই পাশে স্থানীয় দলীয় নেতা কর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। তারা রোর্ড মার্চে আগত নেতাকর্মীদের স্বাগত জানাবেন ও অংশ নেবেন।

যশোর জেলা বিএনপি নবউদ্যমে জেগে উঠেছে খুলনা বিভাগীয় রোডমার্চকে ঘিরে। পাড়া-মহল্লা সর্বত্র দলটির নেতা-কর্মীরা নিজেদেরকে সাংগঠনিক কর্মকা-ের মাধ্যমে ব্যস্ত রেখেছেন। রোডমার্চ সফলে বিরামহীন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বিভাগের এ -প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে ছুটে চলেছেন। ঠিক একইভাবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা জেলা থেকে উপজেলায় ছুটে চলেছেন।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, তারুণ্য দীপ্ত অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নিজের সাংগঠনিক দক্ষতায় সমগ্র খুলনা বিভাগে বিএনপিকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন। একের পর এক সাংগঠনিক কর্মকা-ের মধ্যে দিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিজেকে অন্যন্য উচ্চাতায় নিয়ে গেছেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা রাজপথে আছি রাজপথে থাকবো। খুলনা বিভাগের রোড মার্চে আমরা উপস্থিতির মাধ্যমে সেটি আবারও প্রমাণ করবো।

মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড.শহীদ ইকবাল হোসেন বলেন,রোডমার্চ সফল করতে আমার উপজেলা ১৭টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে নিজ ইউনিটের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর বাইরে উপজেলা বিভিন্ন হাট -বাজারের দলীয় নেতাকর্মীরা প্রচার -প্রচারণা চালিয়েছেন। সাধারণ মানুষ এ সকল কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। ইতোপূর্বে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে অত্যন্ত সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে দলের সকল কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। সেই সকল কর্মসূচিতে জনতার ঢল নেমেছিল।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান জানিয়েছেন, রোডমার্চকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা যৌথসভার মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে সংগঠিত করার পাশাপাশি জনগণকে সম্পৃক্ত করেছেন। এই সরকারের নির্যাতন -নিপীড়নের বিরুদ্ধে সমগ্র জনগণ জেগে উঠেছে। প্রশাসনের অস্ত্র, গুলি কিংবা অঘোষিত ১৪৪ ধারা সেই সাথে শাসকদলের গু-াদের তা-ব উপেক্ষা করে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে যশোরে একের পর এক কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। খুলনা বিভাগের রোডমার্চ অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে স্মরণকালের সকল জনসমাগকে ছাড়িয়ে যাবে।

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) জানান, রোডমার্চ সফলে গতকাল চৌগাছায় লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে হতে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়ে তা বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দলীয় কার্যালয় এসে শেষ হয়। লিফলেট বিতরণে এ সময় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জহুরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক ইউনুস আলী, এমএ সালাম, মাসুদুল হাসান, পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র সেলিম রেজা আওলিয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, আনিছুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা ব্যুরো জানায়, রোডমার্চ কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে বিভাগীয় সমন্বয় সভাসহ বিভাগের ১০জেলায় ও মহানগরে প্রস্তুতিসভা করেছে বিএনপি। রোডমার্চ ঘিরে জনমানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। খুলনা বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতিসভা করেছে। আজ বিভাগের ঝিনাইদহ জেলা থেকে রোর্ডমার্চ শুরু হয়ে মাগুরা-যশোর-নওয়াপাড়া-ফুলতলা হয়ে খুলনার শিববাড়ি জিয়া চত্বরে ৫ লক্ষাধিক লোকের জনসমাবেশ ঘটাবে বলে দলটি জানিয়েছে। সমাবেশে ব্যাপক জনতার উপস্থিতির মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করবে খুলনা বিভাগ।
আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ থেকে জানান, বিএনপির খুলনা অভিমুখে রোডমার্চকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ। সর্বত্রই উচ্ছ্বাস আর আড়ম্বর পরিবেশ। বিশেষ করে ঝিনাইদহ ছাড়াও কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে আজ মঙ্গলবারের রোডমার্চকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কেন্দ্রীয় ও বাইরের নেতাকর্মীদের বরণ করতে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। রোডমার্চের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্মরণীয় করতে ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।

এদিকে রোডমার্চে যোগ দিতে বিএনপির অংগসংগঠনের সাংগঠনিক কমিটির শীর্ষ নেতারা সোমবার বিকেল থেকেই ঝিনাইদহে আসতে শুরু করেন। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম মজিদ জানান, রোডমার্চের হোস্ট জেলা হিসেবে ঝিনাইদহ শহর এখন কেন্দ্রীয় নেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতা ছাড়াও রোডমার্চে যোগ দিতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০ জন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৩০ জন. কৃষকদলের ১০ জন ও মৎস্যজীবী দলের ৫জন কেন্দ্রীয় নেতা ঝিনাইদহে আসছেন।

বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম মজিদ বলেন, ঝিনাইদহে রোডমার্চকে ঘিরে তৃণমূলে আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি আশা করেন চার জেলার প্রায় দুই লাখ নেতাকর্মী ঝিনাইদহের রোডমার্চে অংশগ্রহণ করবেন। ঝিনাইদহ থেকে শুরু হয়ে রোডমার্চ মাগুরা ও যশোর হয়ে খুলনা পৌঁছাবে। এ উপলক্ষ্যে ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।