স্টাফ রিপোর্টার : যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুরানো গাছের ডাল ভেঙ্গে বাসের ছাদে পড়ে দু’জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বেনেয়ালি ব্র্যাক অফিসের সামনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার উপশহর ডি ব্লকের লিয়াকত আলীর ছেলে সালাউদ্দিন (৪৫) ও বেনাপোলের বড় আঁচড়া গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে শিমুল হোসেন (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে একটি কাভার্ডভ্যান বেনাপোল থেকে যশোরের দিকে যাচ্ছিলো। কাভার্ড ভ্যানটি যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের বেনেয়ালী ব্র্যাক অফিসের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা বেনাপোলগামী যাত্রীবাহী বাসকে সাইড দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে পুরানো কড়ই গাছে ধাক্কা দেয়। কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পুরানো কড়ই গাছের উপরের অংশ যাত্রীবাহী বাসের ছাদের উপরে ভেঙ্গে পড়লে ছাদে থাকা যাত্রী সালাউদ্দিন ঘটনাস্থলে নিহত হন। পেশায় তিনি ডায়নামো মিস্ত্রি। গুরুতর আহত হন শিমুল হোসেন। এই অবস্থায় শিমুলকে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ঝিকরগাছা ফায়ার সার্ভিস টিম উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ঝিকরগাছা থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ঝিকরগাছা ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে হাজির হয়। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যশোর বেনাপোল মহাসড়কের দুপাশে অবস্হিত মৃত ও ঝুকিপূর্ণ গাছের কারণে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে। ২০১৭ সালে এই গাছগুলো অপসারণ করে ৪ লেনের রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু পরিবেশবাদী নামধারী কিছু অবিবেচক মানুষ গাছ মারার বিরোধিতা করে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করে। ফলে গাছগুলো রেখেই রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এ প্রসঙ্গে ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এর পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, যাদের বিরোধিতার প্রেক্ষিতে গাছগুলো কাটা গেলোনা এবং রাস্তার মাঝে গাছ থাকার কারণে এখন হরহামেশাই মানুষ মারা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোর উচিৎ এই পরিবেশবাদীদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা।

এদিকে গাছগুলো অপসারণ করার জন্য স্থানীয় জনগন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অতিদ্রুত এই গাছগুলো অপসারণ করে যশোর বেনাপোল মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়েছেন।