সনতচক্রবর্ত্তীঃ সারা দেশের ন্যায় ফরিদপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেড়েই যাচ্ছে, যা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।বর্তমানে সময়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ অস্বাভাবিক ও আকস্মিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।

বুধবার (৬.৭.২৩) ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচামরিচ
৩০০-৪০০ টাকা, পিঁয়াজ বর্তমানে ৬৫ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা, শুকনো মরিচ ৪০০-৫০০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৩০-৪০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শসা ৪৫ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা, কচু প্রতি পিচ৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, আলু ৪০-৫০ টাকা, ঝিংগা ৪০ টাকা, ঢেরস ৪০ টাকা, লেবুর হালি ২০টাকা এছাড়াও ফল এবং সবজিও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।

বোয়ালমারীতে বাজার করতে আসা রাব্বি মিয়া বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা যেমন ক্ষীপ্ত, তেমনি আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। সাধারণ মানুষ বাজারে এসে দাম শুনে প্রয়োজনীয় অনেক কিছু না কিনে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্কুল শিক্ষক শিহাব মোল্লা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম শুধু বাড়ছে আর বাড়ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নেই। সাধারন মানুষের কষ্টের সীমা নেই। নুন আনতে পান্তা ফুরায়-প্রবাদটি আজ চরম সত্য হয়ে ঘাড়ে বসেছে।

মধুখালি রেল গেইট এর সামনে থেকে কথা হয় এক কোম্পানীর প্রতিনিধি রাজু সেকের সাথে তিনি বলেন, খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের চড়া মূল্যের বিরূপ প্রভাব পড়েছে অতিদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর। আলু ছাড়া সব পণ্যের দাম বেশি। যে কারণে নিম্ন আয়ের লোকজন মানবতার জীবন যাপন করছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যাঁতাকলে অসহায় মানুষের দুঃখের কথা বলার কোনো জায়গাও নেই।

ফরিদপুর হাজী শরিয়ত উল্লাহ কাঁচা বাজারের সামনে বাজারে কথা হয় আলামিনের নামে এক সবজি বিক্রেতার সাথে, তিনি বলেন, সবজির দাম অনেক বেশি। কারণ আমদানি ও সরবরাহ কম। আশা করছি, দুই-এক সপ্তাহের মধ্যেই সবজির দাম কমে যাবে।

বাজার বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যসহ অনেক পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। একই সঙ্গে কয়েক দফা জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দেশের বাজারে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা, পরিবহন খরচ ও বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হারের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব রয়েছে বাজারে। পাশাপাশি একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সরবরাহ ঘাটতির সুযোগ নিচ্ছেন। দুর্ভিক্ষের খবর পুঁজি করে তারা পণ্য মজুত ও অযাচিতভাবে দাম বাড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকরা আরো বলেন, বর্তমানে ব্যবসা চলে গেছে সিন্ডিকেটধারীদের হাতে। তারা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কখন দাম বাড়ানো যায়। সারাদেশে কয়েক দফা তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্য করা গেছে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করছে।

তারা মনে করে সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং করলে। দ্রব্যমুল্যের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।