মিল্টন কবীর, কলারোয়া সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশাখা সাহা কর্তৃক ঈদুল আযাহা উপলক্ষে গরীব দু:স্থ অসহায়দের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভিজিএফ’র চাল ও ভিজিডি’র চাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে ধরা পড়েছে। চোরাই ৬৩০ কেজি চাল পুলিশ জব্দ করে জয়নগর ইউপি’র মেম্বর রেজাউল বিশ্বাসের জিম্মায় দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) বেলা আড়াইটার দিকে জয়নগর ইউনিয়নের গাজনা গ্রাম থেকে উক্ত চাল জব্দ করা হয়।
জয়নগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রেজাউল, মনিনরুল ইসলাম, আসমত আলী, রেখা আলমগীরসহ প্রতাক্ষ দর্শীরা জানান, কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউপিতে ঈদুল আযাহা উপলক্ষে গরীব দু:স্থ অসহায়দের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভিজিএফ ও ভিজিডি’র চাল বরাদ্ধ করা হয়। চাল উত্তোলন করার জন্য প্রকৃত দু:স্থদের মাঝে কার্ড বিতরণ করা হয়। কার্ড ধারী দরিদ্র মানুষের মধ্যে চাল বিতরন না করে ৬৩০ কেজি চাল ইউপি চেয়ারম্যান বিশাখা সাহা চুরি করেন।

জানা গেছে, ওই ইউপি’র দফাদার (গ্রাম পুলিশ) আলাউদ্দিনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরসকাটি বাজারস্থ জয়নগর ইউপি কার্যালয় হতে একটি ইজিবাইকে করে প্রথমে ২৫০ কেজি ভিজিডি’র চাল ওই দফাদারের বসন্তপুর গ্রমের বাড়ীতে রেখে আসে। পরে দুপুরের দিকে পুনরায় একই ইজিবাইকে করে ২০০ কেজি ভিজিডি’র ও ১৮০ কেজি ভিজিএফ’র চাল ওই দফাদারের বাড়ীতে নেয়ার চেষ্টা করে। এখবর জানাজানি হলে স্থানীয় জনগণ পথিমধ্যে গাজনা মজনুর সানার চাতাল নামক স্থান হতে চোরাই ওই চাল বোঝাই ইজিবাইক আটক করে। ঘটনাটি কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাসকে মোবাইল ফোনে জনগণের পক্ষ হতে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান। খবর পেয়ে স্থানীয় সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে চোরাই চালসহ চাল বহনকারী ইজিবাইক ও তার চালককে সরসকাটি পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। পুলিশ প্রথম দফায় ৩৮০ কেজি ভিজিএফ ও ২৫০ কেজি ভিজিডি’র সরকারি চাল এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫০ কেজি ভিজিডি’র সরকারি চালসহ দু’দফায় ৬৩০ কেজি সরকারি চাল জব্দ করে। জব্দকৃত সরকারি ওই চাল পুলিশ জয়নগর ইউনিযন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বর রেজাউল বিশ্বাসের জিম্মায় দিয়েছেন।

চোরাই চাল বহনকারি ইজিবাইক চালক উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের বারিক সরদারের ছেলে হাবিবুল্লাহ জানান, দফাদার আলাউদ্দিনের কথামতো জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রথমে ২৫০ কেজি চাল তার বাড়ীতে রেখে আসি। এরপর আবার পরিষদ থেকে ৩৮০ কেজি চাল আলাউদ্দিনের বাড়ী নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথে মজনুর চাতালের কাছে গেলে লোকজন ধরে ফেলে। পরে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

এবিষয় দফাদার আলাউদ্দিন জানান, চেয়ারম্যান বিশাখা সাহার কথামতো সরকারি ভিজিএফ ও ভিজিডি’র চাল আমার বাড়ী নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি চুরির সাথে জড়িত না। এবিষয় জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান বিশাখা সাহা জানান, এতো চাল দফাদার আলাউদ্দিন কেনো তার বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছিলো তা আমার জানা নেই। এবিষয় সেই ভালো জানে। আমি চাল চুরির সাথে জড়িত নই।

কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি। পুলিশ চোরাই চাল উদ্ধার করেছে। ঘটনার সাথে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।