শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি: মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের কাদিরপাড়া সরকারী প্রাইমারী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতি ও রেজুলেশন খাতার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এলাকাবাসী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: জাহিদুল ইসলাম তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার মাসাধিককাল অতিক্রান্ত হলেও ওই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আজ অব্দি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তাদের প্রশ্ন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হবার পরও কেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিরব রয়েছেন? প্রধান শিক্ষকের খুঁটির জোর কোথায়?

এলাকাবাসী সুত্রে জানাগেছে, ইতিপুর্বে তিনি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ( ইউএনও) এর স্বাক্ষর জাল করে ১,৩৬.৮৮৪/- (এক লক্ষ ছত্রিশ হাজার আটশত চুরাশি) টাকা ও ৮৬০০০/-(ছিয়াশি হাজার) টাকা আত্মসাত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সেটি তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় ৪ বছর তার বেতন বন্ধ রাখা হয়েছিলো। পরবর্তীতে তিনি নানা পথে তদবীর করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সক্ষম হন। এতবড় একটা অপরাধ করেও তিনি আজো কিভাবে প্রধান শিক্ষক পদে বহাল রয়েছেন সেটাই কারো বোধগম্য নয়।

ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের সুত্রে জানাগেছে, তিনি স্কুলের দায়িত্ব ও কর্তব্যে পালনেও অবহেলা করে থাকেন। নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকেন না। আবার কখনো কখনো ছুঁটি না নিয়েই মামলা মোকর্দমার কাজে মাগুরা ফৌজদারী আদালতে উপস্থিত থাকেন অথচ: হাজিরা খাতায় উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়ে রাখেন। তিনি স্কুলের ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষকদের সাথে প্রায় রুঢ় আচরণ করেন। এমন কি অভিবাবকদের সাথেও অসাদাচরণ করেন। বিদ্যালয়ের পাঠ দানে গাফিলতি ও শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোন ব্যবস্থা নেন না। এমন কি জাতীয় সংগীতও সঠিকভাবে প্যারেড করান না। তার এহেন অশিক্ষক সুলভ আচরণ এলাকার অভিভাবকদের ভাবিয়ে তুলেছে।

আরো জানাগেছে, এই প্রধান শিক্ষক স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম ছেড়ে এখন মামলা মোর্কদ্দমা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকছেন। তিনি প্রায়ই (কর্মদিবসে) মাগুরায় অবস্থান করেন। মামলা মোর্কদ্দমার তদবীরে ছুঁটে বেড়ান এ কোর্ট থেকে ও কোর্টে। এতে করে কাদিরপাড়া সরকারী প্রাইমারী বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান সর্বনিন্ম পর্যায়ে পৌছেছে।

এলাকাবাসী অতি সত্তর দুর্নীতিবাজ এই প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও তার অপরাধের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী তুলেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন।