স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা বদরুদ্দীন মুসলিম (বিএম) হাইস্কুলে পূর্বে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো সঠিক তদন্তপূর্বক সুষ্ঠ সমাধান হলে আজ হয়তো এভাবে জীবন দিতে হতোনা সপ্তম শ্রেনির মেধাবী শিক্ষার্থী অনি রায়কে। এমনটিই মনে করেন ঝিকরগাছার সচেতন মহল।

বৃহস্পতিবার মোবারকপুর গ্রামের রুহুল আমিন নামের একজন অভিভাবক তার ফেইসবুক আইডিতে একটি ভিডিও আপলোড দিয়েছেন। ওই ভিডিওটি দেখে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারীতে তার ছেলেকে ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে ভর্তি করান। ভর্তির কিছুদিন পর থেকে তার ছেলের আচরণ অস্বাভাবিক মনে হতে থাকে। পরবর্তীতে গত বছরের ২৭ অক্টোবর তার স্ত্রীর সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও বাড়িতে থাকা প্রায় দেড়লাখ টাকার কোনো হদিস না পেয়ে ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী স্কুলেরই ৩/৪জন উপর ক্লাসের বড় ভাইদের দ্বারা জোরপূর্বক মূখে সিগারেট দিয়ে ছবি তুলে ব্লাকমেইলিং এর শিকার হয়েছে মর্মে স্বীকার করে। শ্রীরামপুর গ্রামের অপর এক অভিভাবক হারুণ অর রশীদ বলেন তার ৬ষ্ঠ শ্রেনির ছেলেকে একই ভাবে স্কুল ক্যাম্পাসে ব্লাকমেইল করে প্রায় একলাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একই স্কুলের উপরের ক্লাসের ছাত্ররা। এরকম ঘটনা হরহামেশা ঘটলেও ভুক্তভোগীরা কখনোই ন্যায়বিচার পায়নি।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেয়ার দিন দ্বিতল ভবনের সিড়িতে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর ঘটনা প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদকে অবগত করা হলেও সুবিচার করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। স্কুল ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের সিগারেট খাওয়ার বিষয়টিও কৌশলে ধামাচাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিএম হাইস্কুলে।

কিছু দিন পূর্বে নির্বাসখোলা ইউনিয়নের শিওরদাহ গ্রামের এক ছাত্রী বিএম স্কুলেরই এক ছাত্রের দ্বারা প্রেমে প্রতারিত হয়ে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছিলো।

ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলে একের পর এক ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ সমাধান হলে হয়তো অনি রায়ের মত শিক্ষার্থীরা অকালে ঝরে যেতোনা বলে মনে করেন অভিভাবকরা। উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের ৭ম শ্রেনির শিক্ষার্থী অনি রায় একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা সহ ন্যায় বিচারের দাবীতে ফুঁসে উঠেছে ঝিকরগাছাবাসি।