স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক : ক্যাপসিকামের রয়েছে নানা উপকারিতা। আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি করে ক্যাপসিকাম রাখলে পেতে পারেন অনেকরকম অসুখ থেকে মুক্তি। চলুন জেনে নেই ক্যাপসিকামের কিছু উপকারিতা-

ক্যাপসিকামের ভিটামিন সি এবং কে দেহের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে। এতে করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় অনেকাংশে, যার ফলে ছোটোখাটো নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হয়।

ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি দেহে আয়রন শোষণে সহায়তা করে। এতে দেহে আয়রনের অভাব জনিত সমস্যা দূর হয়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং বেটা ক্যারোটিন যা দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।

ক্যাপসিকামের অ্যাক্টিভেটিং থার্মোজেনেসিস এবং হজম শক্তি উন্নত করার ক্ষমতা দ্রুত ওজন কমাতে সহায়ক।

ক্যাপসিকামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সহায়ক। ক্যাপসিকামে রয়েছে সালফার কম্পাউন্ড যা গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার এবং এসোফেগাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে।

ক্যাপসিকামে রয়েছে লাইকোপেন না কার্ডিওভ্যস্কুলার নানা সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে এবং হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষভাবে সহায়ক ক্যাপসিকাম। এর ক্যাপসাইসিন উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে ক্যাপসিকামের জুস হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যা ও পেটের পীড়াজনিত রোগ যেমন গ্যাস হওয়া, ডায়রিয়া, ডিসপেপসিয়া ইত্যাদি দূর করতে সহায়তা করে।

লাল ক্যাপসিকাম
লাল ও সবুজ ক্যাপসিকামের মধ্যে ক্যাপসিকাম এর উপকারিতা লালটিতেই বেশি পুষ্টিগুণসম্পন্ন। এতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও বেশি থাকে। ত্বক সুন্দর রাখতে লাল ক্যাপসিকাম খাওয়া জরুরী। তাছাড়া চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং চোখও ভালো থাকে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকার কারণে মোটা হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

ত্বক পরিষ্কার রাখতে ক্যাপসিকাম বেশ উপকারী। ত্বকের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত রোগের ক্ষেত্রে ক্যাপসিকাম রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। লাল ক্যাপসিকাম যেকোনো ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে সহায়ক। বিশেষ করে ত্বকের ব্রণের হাত থেকে রক্ষা করে।

খনিজের অভাব পূরণ করে। পটাশিয়াম বেশি থাকার কারণে বয়স্কদের জন্য লাল ক্যাপসিকাম খাওয়াই ভালো। ক্যাপসিকাম খেলে মাথার তালুর রক্ত চলাচল বজায় রাখতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এই সবজি। বিভিন্ন উপকরণ বেশি থাকার কারণে বাজারে লাল ক্যাপসিকামের চাহিদা তুলনামূলক বেশি।

সবুজ ক্যাপসিকাম
সবুজ ক্যাপসিকামও বিভিন্ন পুষ্টি উপকরণে ভরপুর। এই ক্যাপসিকাম অল্পবয়সীদের জন্য বেশি উপকারী। এতে ক্যাপসাইসিনস নামক উপাদান ডিএনএর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের সংযুক্ত হওয়াতে বাধা দেয়। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।

সর্বপরি ক্যাপসিকাম এর উপকারিতা বলতে গেলে সবুজ ক্যাপসিকাম সাইনাস, মাইগ্রেন, ইনফেকশন, দাঁতে ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ইত্যাদি ব্যথা দূর করতে কাজ করে। এটি শরীরের বাড়তি ক্যালরি পূরণে কাজ করে। ফলে চর্বি জমে না এবং ওজনও বৃদ্ধি পায় না। সবুজ ক্যাপসিকাম রক্তের অণুচক্রিকা উদ্দীপিত করে সংক্রমণ রোধ করে থাকে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে দৈনন্দিন খাবার তালিকায় সব রঙের ক্যাপসিকাম রাখুন।

১। ত্বক, হাড় ও চোখের জন্য ভালো
বেলপেপারের মধ্যে ভিটামিন সি থাকায় চোখ এবং ত্বককে ভালো রাখে। ভিটামিন-কে রক্ততঞ্চনে সাহায্য করে। এটা হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।

২। ওজন কমাতে
যদি ওজন কমাতে চান তা হলে খেতে পারেন সবুজ ক্যাপসিকাম কিংবা বেলপেপার।

৩। হজমে সাহায্য করে
যারা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য সবুজ ক্যাপসিকাম খুবই ভালো। এটি পাকস্থলীর আলসার বা ঘা সারাতেও সাহায্য করে।

৪। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
বেলপেপার ডায়াবেটিস নিয়িন্ত্রণ করতেও কার্যকর এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখে।

৫। ক্যানসার প্রতিরোধে
ক্যানসারের ওসুধ হিসেবে দারুণ উপকারী সবুজ ক্যাপসিকাম অথবা বেলপেপার।

৬। চুলের বৃদ্ধিতে
চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে প্রায় সকলেই ভুক্তভোগী। কিন্ত বেলপেপারে সেই সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।

৬-৭ টুকরো বেলপেপার গরম জলে সেদ্ধ করে নিন। আর ৩-৪ টুকরো শুকনো বেলপেপার একসঙ্গে পেস্ট করে একটি হেয়ার প্যাক বানিয়ে নিন। এর পরে ১২-১৫ মিনিট মাথার স্ক্যাল্পে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ফেলুন।