সনতচক্রবর্ত্তী: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে সংসার চালান ১০ বছরের শিশু আরাফাত। এই বয়সে মা, ভাই, বোনকে নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আরাফাত। পড়াশুনো, খেলাধুলোর বয়সে হাতে নিয়েছে সংসারের চাবির দায়িত্ব।

আরাফাত সেখ বোয়ালমারী উপজেলার হাটখোলা চর গ্রামের মৃত দাউদ সেখের ছেলে। পরিবারকে একটু সুখে রাখতে বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে হাওয়াই মিঠাই বিক্রয় করে ১০ বছরের শিশু আরাফাত।

বৃহস্পতিবার (৫ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বোয়ালমারী উপজেলার কামারগ্রামের আখড়া এলাকায় শিশু কিশোরদের কাছে হাওয়াই মিঠাই বিক্রয় করতে দেখা যায় আরাফাতকে। তখনই তার এই কর্মের বিষয়ে কথা সাংবাদিকদের সাথে।

জীবন যুদ্ধের সৈনিক আরাফাত সেখ জানান, অল্প বয়সে বাবা মারা গেছে, মা,ভাই, বোনকে নিয়ে সংসারের চাবির দায়িত্ব হাতে নিয়েছি।

শিশু আরাফাত প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করেন।এতে তার লাভ ১০০ টাকার করে থাকে। তবে হাওয়াই মিঠাই প্রতি পিচ ১০ টাকা করে বিক্রি করে।

তিনি জানান,বোয়ালমারীতে হাওয়াই মিঠাই চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। আগে গ্রামাঞ্চলে বিক্রি ভালো হলেও ইদানিং বোয়ালমারীতে বেঁচাকেনা ভালো হচ্ছে।

বর্তমানে তিনি উপজেলা নিউ মডেল একাডেমি, বোয়ালমারী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়,জর্জ একাডেমীর সামনে নিয়মিতভাবে বিক্রি করে হাওয়াই মিঠাই।

আরাফাত জানান, বিশেষ করে শিশুরাই এর প্রধান ক্রেতা। পাঁশাপাশি অনেক লোক বিভিন্ন বয়সী মুরব্বিরাও এই খাবারটি পছন্দ করেন। মুখে দেওয়া মাত্রই এই খাবারটি গলে যায়,যে কারণে অনেকের কাছে এই খাবারটি আশ্চর্যজনক।
হাওয়াই মিঠাই ক্রেতা ৮ বয়সী সুমী সাহা বলে,মিঠাই খেতে ভালো লাগে, সামনে পেলে ক্রয় করি।

আরেক ক্রেতা সুকুমার রায় বলেন,হাওয়াই মিঠাই বাড়ির বাচ্চারা পছন্দ করে তাই ৫ পিচ বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি।

হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতা শিশু আরাফাত সেখ জানান ‌, তার কাছে দুই রকমের হাওয়াই মিঠাই পাওয়া যায়। একটি সাদা অপরটি গোলাপী । এরমধ্যে সাদা রংয়ের হাওয়াই মিঠাইয়ের চাহিদা বেশি থাকলেও গোলাপি রঙের মিঠাই ভালোই বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলে, সরকারি যদি কোন সুযোগ পেতাম বা কোন বৃত্তবান যদি আমার পরিবারের দায়িত্ব নিত আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারতাম।