নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলে ইটভাটায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া ভাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।
নড়াইলে অনুমোদন ছাড়াই চলছে অধিকাংশ ইটভাটা। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কৃষিজমি আর লোকালয়ে গড়ে ওঠা এসব ভাটায় বেপরোয়াভাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।

যার ফলে একদিকে উজাড় হচ্ছে গাছপালা, অন্যদিকে কমছে কৃষি জমি। কাঠ দিয়ে পোড়ানো ইটভাটার তপ্ত কালো ধোঁয়া, ধুলা ও ময়লার কবলে হুমকির মুখে পড়েছে ইটভাটা সংলগ্ন এলাকার ফসলি ক্ষেত, জনবসতি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোন কোন ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু শ্রম। নিয়ম বর্হিভূতভাবে চালু থাকা সকল ইটভাটার কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের।

এছাড়া ইট ভাটার কাছাকাছি অবস্থিত সরকারি প্রাইমারি ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থী-শিক্ষকবৃন্দও স্বাস্থ্যগত দিকদিয়ে হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্থ। এমনই একটি বি এন্ড কে নামের একটি ইটভাটা রয়েছে নড়াইল সদরের আউড়িয়া ইউনিয়নের দত্তপাড়ায়। এ ইটভাটা থেকে আনুমানিক ২শত গজ উত্তরে অবস্থিত দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দত্তপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

সরজমিনে গিয়ে কথা হয় দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমত আরার সাথে। স্কুল সংলগ্ন ইটভাটা থাকায় কেমলমতি শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের কোন ক্ষতি হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলে বর্তমানে ২৪৫ জন শিক্ষার্থী আছে। এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩শত জনের মত হয়। ইটভাটার ধেঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতিসহ শিক্ষার্থী ও আমরা সকলেই স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে ক্ষতি্গ্রস্থ হচ্ছি। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ইসমত আরা বলেন, প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করবেন স্কুল পরিচালনা কমিটি। কিন্তু ইট ভাটার মালিকরাই রয়েছেন স্কুল পরিচালনা কমিটিতে। তারাতো কোন অভিযোগ করবেননা ।

ইসমত আরা আরও বলেন, ইতোপূর্বে কিছু সাংবাদিক এসে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতকারসহ ছবি এবং ভিডিও করে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওইসব ভিডিও, ছবি বা কোন নিউজ প্রকাশিত হয়েছিল কিনা জানিনা।

অপরদিকে দত্তপাড়া মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সনৎ কুমার সাহা জানান, এই ইটের ভাটাটি এর আগে স্কুলের খুব কাছে পশ্চিম পাশে ছিল। তখন ভাটার ধূঁয়ার কারনে পরিবেশসহ শিক্ষার্থী ও আমরা সকলেই স্বাস্থ্যগতভাবে ক্ষতি্গ্রস্থ হচ্ছিলাম। অনেক চেষ্টা করে ওটা ওখান থেকে সরাতে পেরেছি। বর্তমানে যেখানে আছে ওর ধূঁয়ায় আমাদের তেমন কোন ক্ষতি হচ্ছেনা বলে মনে হয় ।

এলাকাবাসি জানান, ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও তাপে সংলগ্ন এলাকার ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও ২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। তাছাড়া কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি ইট তৈরির কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহারের ফলে জমিগুলো চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।