শালিখা মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরার শালিখা উপজেলা আড়পাড়া খাদ্য গুদাম থেকে ১২০ টন চাল গায়েবের বিষয়ে সম্প্রতি তদন্ত কমিটি গঠন হয়।তদন্ত কমিটি গঠনের পর মোহাম্মদপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহাদী হাসান শিহাব তদন্ত কাজ শুরু করেন। কয়েকটি খামাল তদন্তের একপর্যায়ে গত ২৯/১১/২০২২ তারিখে শফিকুল ইসলামকে আটক করে এবং ৪টি গুদাম ঘর সিলগালা করা হয়।

এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। বাদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী।গত কাল ২ জানুয়ারি কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবির নাথ চৌধুরীকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার ভূমি উম্মে তাহমিনা মিতু,সহকারী রসায়ন বিদ ইকরামুল কবির, ঝিনাইদহ সদরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তাজ উদ্দীন আহম্মেদকে সদস্য করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ২ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে পুনরায় তদন্ত শুরু করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা, মাগুরা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার, শালিখা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী।

জানাযায় গত নভেম্বর মাসে বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তা ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গুদামে পরিদর্শনে আসেন।খামালে চাল কম আছেবলে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গত ৮/১২/২০২২ তারিখে শফিকুল ইসলামকে সাসপেন্ড করে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে মাগুরা সদর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিকিকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব দিয়ে তদন্তকাজ শুরু হয়।কিন্তু উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী ৩০/১১/২০২২ তারিখের ৪৩৫ নং স্বারক মোতাবেক পাক্ষিক রিপোর্টে এবং শফিকুল ইসলামের রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যায় গত ১৬ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চালের ১৭টি খামালে ৪৫৩৬৭ বস্তায় ১৫৬৭.৯৭৫ মে.টন চালের ভিতর পক্ষকালে বিক্রির পর চালকল ভিত্তিক পাক্ষিক ৭৮ টন ও আমদানি কারণ, পাইকারী ও খুচরা ব্যাবসায়ীদের পাক্ষিক ৬৩ মে.টন চালসহ মোট ১৪১ মে.টন চাল মজুদ আছে। অথচ মাত্র ৮দিন পর গত ৮/১২/২০২২ তারিখে শাফিকুল ইসলামকে সাসপেন্ড করার পর তদন্তকালে ১২০ টন চাল গায়েবের সংবাদ প্রকাশ কর হয়।ফলে মাত্র ৮ দিনের ব্যবধানে কিভাবে এতচাল গায়েব হয়েছে এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার বলেন ওজন, মান, মওজুদ এর ভার থাকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এর উপর। এবং গোডাউনে কোন মাল কমহলে গোডাউন কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সমান পরিমান দায়ী হবে।এছাড়া তিনি আরো বলেন খামালের তদন্ত কালে ত্রুটি বেশী পাওয়ায় আইনানুসারে সরকারি সম্পদ ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় নিয়ম অনুযায়ী শফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের তদন্ত কর্মকর্তা মাহাদি হাসান শিহাব বলেন কতৃপক্ষের নির্দেশে কয়েকটি খামাল তদন্তের একপর্যায়ে শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে গোডাউন সিলগালা করলে তদন্ত কাজ স্থগিত করে দিয়েছি।

এব্যপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী বলেন গত ৩০/১১/২০২২ তারিখে পাক্ষিক রিপোর্টে কোন চাল কমছিল না এটা ঠিক। কিন্তু আমরাতো বস্তা বস্তা গুনে রিপোর্ট করা সম্ভব না। আমি খামালের বাইরের লেয়ার গুনে সঠিক রিপোর্ট করেছি। যেখানে চালের কম হওয়ার সঠিক বিষয় বুঝতে পারিনি। এ ছাড়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সকালে গুদাম খুলবে এবং কাজ শেষ হলে প্রত্যক দিন স্বাক্ষরিত সিলগালা করবে।যেখানে প্রত্যেক গোডাউনে ৮টি তালা থাকে। এবং সবগুলো চাবি থাকে তার কাছে। ফলে কোন মাল কম হলে আমি দায়ী না। খামাল দেওয়ার সব সময় আমার থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। এ ব্যপারে শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা বলেন ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি আসছে।আমি তাদের ফাইল বুঝে দিয়েছি। তদন্ত কমিটির আহবায়ক সুবির কুমার চৌধুরী বলেন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে দ্বিতীয় পর্যায়ে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। তিন দিন চলমান থাকবে। তবে এর সাথে লেবার সর্দারসহ আরো অনেকে জড়িত থাকতে পারে। পূর্ণ তদন্ত শেষ বুঝা যাবে কত মে.টন চাল আত্মসাৎ হয়েছে এবং এর সাথে জড়িত কারা।