সনতচক্রবর্ত্তী: ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে ফরিদপুর জেলার মানুষ । সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে শীতের প্রভাবে খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়ছেন বিপাকে। এছাড়া শিশু ও বৃদ্ধরা ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকে এখন পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। সকালে ফরিদপুর শহরের বিভিন্নস্থান থেকে ফরিদপুর -বরিশাল-ফরিদপুর ঢাকা মহাসড়ক রুটের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। এসব যানবাহনের গতিবেগ ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার।

ফরিদপুরে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকা থেকে আসা রাজধানীর পরিবহনের চালক জানান, এতো কুয়াশা, রাস্তায় গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সাধারণত ঢাকা থেকে ফরিদপুর গাড়ি নিয়ে আসতে সময় লাগে মাত্র ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট, আর সেখানে আজ সময় লেগেছে চার ঘণ্টা।

বোয়ালমারী চৌরাস্তায় ট্রাকের চালক নুরআলম এর সাথে কথা হয় তিনি বলেন,কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি। কিন্তু যে কুয়াশার অবস্থা কখন যে পৌঁছাতে পারব বুঝতে পারছি না। কুয়াশায় গাড়ি জোরে চালানো যায় না, এতে সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে তাই বাধ্য হয়ে হেডলাইন জ্বালিয়ে চলছি।

ভ্যানচালক জাকির বলেন, ভোরে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। কুয়াশায় রাস্তায় কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি কিন্তু কোনো যাত্রী পাচ্ছি না। যদি ভাড়া না মারতে পারি তাহলে কিস্তি, সংসার চালাবো কীভাবে?

বৃহস্পতিবার এখন পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখতে পায়নি বোয়ালমারীবাসী। কাজের সন্ধানে আসা দিনমজুরদের ঘন কুয়াশার কারণে শহরের রেলস্টেশনে বসে থাকতে দেখা যায় মানুষ বিক্রির হাটে( কৃষাণ হাটে)।

শীতের মোটা কাপড় পড়ে কাঁধে কোদাল নিয়ে কাজের খোঁজে হেঁটে চলছেন ৫৫ বছরের জমির উদ্দিন। জানতে চাইলে বলেন, কাজের খোঁজে বের হয়েছি বাবা। কাজ না করলে সংসার চলবে কী করে? ছেলেরা যে যার মতো সংসার করছে। তোমার কাকিকে নিয়ে এখন আমার জীবনের বেহাল দশা। শীত আর কুয়াশাকে ভয় করলে কাজ পাওয়া যাবে না।তাই বাধ্য হয়ে কোদাল তুলে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি কাজের সন্ধানে ।