ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহে ইউপি চেয়ারম্যান এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারকে অত্যাচার ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে নির্যাতিত সংখ্যালঘু পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন তন্ময় মজুমদার। তিনি শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া গ্রামের তুষার কান্তি মজুমদারের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে চিন্ময় কুমার মজুমদার, তুষার কান্তি, অমলা রানী মজুমদার ও তাপসি মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তন্ময় মজুমদার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও শৈলকুপার বগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রয়ারি আমাকে ফরিদ মেম্বর ও মাহাতাব খা শ্রীপুর বাজারে ডেকে নিয়ে জোর পুর্বক স্ট্যম্পে সাক্ষর করিয়ে নেন। এ ঘটনায় আমার পিতা তুষার কান্তি মজুমদার নিজের প্রাণ রক্ষা ও শিমুলের হাত থেকে জমিজমা রক্ষার স্বার্থে আমার নামে মামলা করে জেলা পাঠিয়ে দেন। আমি ২০২১ সালের ১৫ মার্চ থেকে এক বছরের ২৬ সেপ্টম্বর পর্যন্ত কারাভোগ করি। কারাগারে থাকা অবস্থায় শিমুলের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার পরিবারের উপর অকথ্য নির্যাতন ও অত্যাচার করতে থাকে। ২০২১ সালের ৫ জুলাই শিমুলের লোকজন বাড়ি হামলা করেই ক্ষ্যন্ত হয়নি, মিথ্য মামলা দিয়ে হয়রানী করতে থাকে। তারা পুকরের মাছ ও গাছের নারিকেল লুটপাট করে। তন্ময় অভিযোগ করেন, আলফাপুর রতœাট বগুড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চল্লিশ শতক জমি দান করা হলেও দাতা সদস্য হিসেবে তার পিতার কোন নাম রাখেনি। লিখিত বকএতব্য দাবী করা হয়, এলঅকার আতিয়ার, লাল মিয়া, কামাল ও বিল্লাল আমাদের বেনামাকৃত জমি ফেরৎ দিবে বলে কথা দিলেও যুবলীগ নেতা শিমুলের কারণে জমি ফেরৎ দিচ্ছে না। এছাড়া দুইটি পুকুরের লীজের টাকাও দিচ্ছে না। তন্ময় মজুমদার শিমুল ও তার সন্ত্রাসী দলবলের হাত থেকে এই সংখ্যালঘু পরিবারকে রক্ষার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তেক্ষেপ কামনা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও শৈলকুপার বগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শিমুল তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমি কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নয়। রাজনীতি ও সামাজিক প্রতিহিংসার কারণে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার ছবি ও রাজনৈতিক পদপদবী উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে যে মিথ্যাচার করা হয়েছে এটা নিন্দনীয় বলে মনে করি। আমি দুই পক্ষকে ডেকে একটি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্ত নানা প্রতিকুলতার কারণে বিষয়টি সমাধান সম্ভব হয়নি। তাছাড়া তন্ময় মজুমদারের পরিবারের বিরুদ্ধে জমি বিক্রি নিয়ে নয়ছয় করার অভিযোগ আছে।

এদিকে তন্ময় মজুমদার সংবাদ সম্মেলেন করার পরপরই তার প্রতিপক্ষ মাহাতাব খাঁ সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি দাবী করেন তন্ময় মজুদমার জমি বিক্রির জন্য অঙ্গিকারনামা সম্পাদক করলেও তিনি টাকা নিয়ে জমি দিচ্ছেন না। তন্ময় মজুমদার তাদের কাছ থেকে দুই লাখ আশি হাজার টাকায় জমি বিক্রির চুক্তি করে অগ্রিম দুই লাখ কুড়ি হাজার টাকা নগদ গ্রহন করেন। বাকী ষাট হাজার টাকা জমি রেজিষ্ট্রির সময় নিবেন বলে অঙিবগকারনামায় উল্লেখ করেন। এদিকে মাহাতাব খাঁ যে অঙ্গিকারনামা সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শন করেন তাতে জমির পরিমান ২৯ শতকের স্থলে ৬৯ শতক ও দুই লাখ আশি হাজার টাকার স্থলে কুড়ি লাখ আশি হাজার টাকা লেখা আছে। ফলে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লেখা এই অঙ্গীকারনামা সঠিক না জাল তা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন। ফলে মাহাবাব খাঁ ও তার সঙ্গে উপস্থিত শরিফুল ইসলাম, মুক্তার খা, রাজিয়া খাতুন ও নারজিনা খাতুনরা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।