কালিয়াকৈর প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বোয়ালী ইউনিয়নের গাছবাড়ীতে হাতে হাতকড়া ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়ালেন বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আলী আজম। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজ বাড়ি গাছবাড়ীতে আসেন। তার মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে রোববার মৃত্যুবরণ করেন। জানাজায় এলাকার শত শত লোক অংশ নেয়।

স্বজনরা জানান, বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজমের মা রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে শেষ বার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে তার আইনজীবী সোমবার তার প্যারোলে মুক্তি চান। আদালত সেদিন তাকে মুক্তি না দিলেও মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তিনি প্যারোলে মুক্তি পেয়ে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজা পড়ান। এ সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জানাজায় উপস্থিত লোকজন। সেই অবস্থার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ২৯ নভেম্বর কালিয়াকৈর থানার একটি রাজনৈতিক মামলায় তিনি আসামি ছিলেন। ২ ডিসেম্বর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদসহ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ বলেন, মায়ের মৃত্যুর খবরে আলী আজমকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, জানাজার সময়ও তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি।

আলী আজমের ভাই আতাউর রহমান জানান, তারা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি জানাজা পড়ানোর সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিতে বললেও পুলিশ খুলে দেয়নি। সম্প্রতি একটি মিথ্যা রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সভাপতি শাহজাহান মিয়া বলেন, বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখা উচিত ছিল। তিনি কোনো দাগি আসামি নন বলে শুনেছি। তাই তাকে শুধু হাতকড়া পরিয়ে জানাজায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে পারত। গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ বজলুর রশিদ বলেন, আলী আজমকে নয়জন পুলিশ সদস্যসহ তার বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা এবং জেল আইন অনুযায়ী তাকে পাঠানো হয়।