সনতচক্রবর্ত্তী:ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে সবাই নিজের পছন্দের দলের সমর্থনে কত কিছুই না করছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম নিজ সমর্থিত দলের পতাকা আর জার্সি তো কিনছেই। তবে ফরিদপুরে পাওয়া গেলো ব্যতিক্রমী এক যুবক ও তার বন্ধুদের।

ফরিদপুরের ছাত্রনেতা খায়রুল ইসলাম ও তার বন্ধুরা বিশ্বকাপ উপলক্ষে পতাকা ও জার্সি কেনার টাকা দিয়ে শহরের প্রায় শতাধিক পথশিশুকে নতুন শীতবস্ত্র উপহার দিয়েছেন। হতদরিদ্র এসব পথশিশুদের মার্কেটে নিয়ে গিয়ে তাদের পছন্দের শীতবস্ত্র কিনে দিয়েছেন।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।

এই আয়োজনের উদ্যোক্তারা হলেন-খায়রুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, শাওন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম পিয়াস, ইমন শেখ ও রাকিব সরদার। তারা এরই মধ্যে নানান সামাজিক কর্মকাণ্ড করে পরিচিতি পেয়েছে। বিশেষ করে ফরিদপুর ব্লাড লিংক নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে অসহায় ও গুরুতর রোগীদের বিনামূল্যে রক্তের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন তারা।

শীতবস্ত্র পাওয়া পথশিশুদের মধ্যে জমেলা (৭), ফাতেমা (১১), দিব্য (৯), গিয়াস (৮), রফিক (৭) বলেন, আমরা গরীব মানুষ। খাবারই পাইনা জামা-কাপড় পাবো কোথায়। এই শীতে অনেক কষ্ট হতো। শীতের জামা-কাপড় পেয়ে অনেক খুশি লাগছে।

ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, শাওন আহমেদ বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করি ভালো কাজের সঙ্গে থাকার। আর এই ভালো কাজের চিন্তা থেকেই পথশিশুদের জন্য আমাদের এ উদ্যোগ।

খায়রুল ইসলাম বলেন, বিশ্বকাপ খেলার শুরুর আগেই শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদে বিভিন্ন দেশের পতাকা আর সবার গায়েই সমর্থিত দলের জার্সি। জার্সি কিনতে গিয়ে দেখলাম অনেক টাকা দাম। এত টাকা দিয়ে জার্সি কিনে,পতাকা টাঙিয়ে লাভ টা কি, ভেবে টাকাটা রেখে দেই। পরে লক্ষ্য করলাম, আমাদের শিশুরা শীতের কাপড় তো দূরের ব্যাপার ঠাণ্ডার মধ্যে খালি গায়ে রাস্তায় ও মাঠে ঘুরছে। সিদ্ধান্ত নিলাম সাধ্যমতো কয়েকজন পথশিশুকে শীতের পোশাক কিনে দিবো। বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করলাম। ওরাও অর্থ সহায়তা দিলো। ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, সেটা দেখে কয়েক শুভাকাঙ্ক্ষী অর্থ পাঠিয়েছে। সব টাকা মিলিয়ে আমরা ১০০ জনের বেশি পথশিশুকে মার্কেটে নিয়ে গিয়ে তাদের শীতবস্ত্র কিনে দিয়েছি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কান্তি বালা বলেন, তাদের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনের জন্য সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানাই। নিঃসন্দেহে ভালো একটি উদ্যোগ।