রবিউল ইসলাম মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : রাতের কুয়াশাছন্ন আকাশ, শেষ রাতে শীতের আভাস আর সকালে ঝরে পরা শিউলি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীতের আগাম বার্তা। শীতের এই আগমনী বার্তায় ঝিনাইদহ মহেশপুরের গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস আহরণে উপজেলার প্রতিটি গ্রামের গাছিরা গাছ প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন। যারা খেজুরের রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে গাছ কাটায় পারদর্শী স্থানীয় ভাষায় তাদের গাছি বলা হয়।

শীতের দিন মানেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রস ও নোলেন গুড়ের মৗে-মৌ গন্ধ। শীতের সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বােঝানাে যায় না।আর খেজুর রসের পিঠা এবং পায়েস খুবই সুসাধু খাবার। এ কারণে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষীর, পায়েস ও পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়।

এলাকায় ঘুরে দেখা যায় মহেশপুর উপজেলার স্বরুপপুর চাপাতলা,পাথরা,ভৈরবা,শ্যামকুড় মাঠের খেজুর বাগানে গাছিরা হাত দা নিয়ে ও কোমরের সাথে গাছে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচা-ছােলার কাজ শুরু করেছেন।শীত মৌসুম এলেই এই উপজেলায় সর্বত্র শীত উদযাপনের নতুন আয়ােজন শুরু হয়।খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই এলাকার গাছিরা। তাদের মুখে ফুটে ওঠে রসালাে হাসি।গাছিরা জানান-আর মাত্র কয়েক দিন পরেই গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে।রস থেকে গুড় তৈরি শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ-ফালগুন মাস পর্যন্ত। প্রথমে বাজারগুলােতে উঠতে শুরু করবে সুস্বাদু খজুরের নইলেন পাটালি গুড়। অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। এছাড়া খেজুর গাছের রস হতে উৎপাদিত গুড়ের দেশের বিভিন স্থানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানান তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃহাসান আলী জানান-মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের ধারে ও চাষিদের চাষের জমির পাশে ৫০ হাজারের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে।এ মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে যে রস সংগ্রহ করা হয় তার থেকে ৬০০-৭০০ মেট্রিকটন গুড় উৎপাদন করা সম্ভব। যেটা থেকে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করতে পারবে গাছিরা।এতে তাদের পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে আসবে বলে জানান।