আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১ মাসের বেশি সময় থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন চলেছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধপরিস্থিতি এই দীর্ঘ সময়েও কোনো সমাধানের মুখ দেখেনি বরং পরিস্থিতি বর্তমানে আরো অবনতির দিকে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের একটি অস্ত্রভান্ডার উড়িয়ে দিয়েছেন তারা। তাছাড়া নতুন করে আরেকটি জ্বালানি ডিপোতে হামলা করার দাবি করেছে রাশিয়া।

এ ব্যাপারে শনিবার (২৬ মার্চ) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাসেনকোভ বলেন, সমূদ্র থেকে চারটি কালিবার ক্রুস ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে, জায়তোমায়ার প্রদেশের ভেলেকি কোরোভোনসিতে অবস্থিত একটি অস্ত্র ভান্ডার গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই হামলায় একটি অস্ত্র ও গোলাবারুদে ভরপুর গুদাম ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইগোর কোনাসেনকোভ আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের ১১৭টি সেনা স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৬টি কমান্ড পোস্ট ও তিনটি বিমানর বিবৃতিতে কোনাসেনকোভ আরও বলেন, এছাড়া উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ওনেক্স ক্রুস ক্ষেপণাস্ত্র মাইকোলাইভে আঘাত হেনেছে। এই হামলায় মাইকোলাইভের একটি জ্বালানি ডিপো ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইগোর কোনাসেনকোভ জানিয়েছেন, মাইকোলাইভের যে জ্বালানি ডিপোটি ধ্বংস করা হয়েছে সেই ডিপো থেকে দক্ষিণ দিকে অবস্থান নেওয়া ইউক্রেনের সেনা সদস্যদের জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছিল। র আগে শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাসেনকোভ দাবি করেছিলেন, রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় জ্বালানি ডিপোটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। রাজধানী কিয়েভের কাছে অবস্থিত কালইয়ানকোভাতে এ ডিপোটি ছিল।

উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।

সূত্র: আলজাজিরা