০৩:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

নেপালে বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট দুর্যোগে কমপক্ষে ৪৭ জনের মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৬:৫৭:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেপালে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একাধিক রাস্তা বন্ধ এবং সেতুগুলো ভেসে গেছে। কাঠমান্ডুকে চীনের সীমান্তের সাথে সংযুক্ত করা আরনিকো হাইওয়েটি একাধিক পয়েন্টে রাস্তা ধসে যাওয়ার পরে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলের সাথে সংযোগকারী বিপি হাইওয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।

রোববার সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর মুখপাত্র কালিদাস ধৌবোজি জানিয়েছেন, পূর্ব ভারতের সীমান্তবর্তী ইলাম জেলায় পৃথক ভূমিধসে পঁয়ত্রিশ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার থেকে বন্যায় ভেসে যাওয়ার পর এখনো নয়জন নিখোঁজ এবং নেপালের বেশ কিছু জায়গায় বজ্রপাতে আরও তিনজন মারা গেছে। দেশের পূর্ব ও মধ্য অঞ্চলে অবিরাম বর্ষণ জারি রয়েছে।

নেপালের জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র শান্তি মাহাত বলেছেন, ‘নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে। জরুরি পরিষেবা এবং দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া দলগুলোকে ছাড় দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এবং মঙ্গলবার দেশব্যাপী সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। হড়পা বানে ১১ জন নিখোঁজ। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে সময় লাগছে।’ তার কথায়, এমন অনেক এলাকা রয়েছে, যেখানে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কেও বিশদে জানা যাচ্ছে না।

বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনাও। কাঠমান্ডুর বন্যাপ্রবণ এলাকায় উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। নদীগুলো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ফলে নিচু এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে। বাগমতী, হনুমন্তে, মনোহরা, ধোবি খোলা, বিষ্ণুমতি, নাক্কাহু এবং বালখু নদীর জল হু হু করে বাড়ছে। ফলে বসতি এলাকাগুলোতেও জল ঢুকতে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি জেলায় ধস এবং বন্যার আশঙ্কা বেড়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, সুনসারি, উদয়পুর, সাপতারি, সিরাহা, ধনুষা, মহোত্তারি, সারলাহি, রাউতাহাত, পারসা, সিন্ধুলি, দোলাখা, রেমছাপ, সিন্ধুপালচক, কাভরেপালনচক, কাঠমান্ডু, ললিতপুর, ভক্তপুর, মাকওয়ানপুর ও চিটওয়ান।

কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র রিনজি শেরপা জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিমান পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে দুর্যোগের জেরে। তবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক। বর্ষা মৌসুমে বেশিরভাগ পার্বত্য নেপালে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় প্রতি বছর শত শত মানুষ মারা যায়, যা সাধারণত জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে থাকে।

Please Share This Post in Your Social Media

নেপালে বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট দুর্যোগে কমপক্ষে ৪৭ জনের মৃত্যু

আপডেট: ০৬:৫৭:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেপালে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একাধিক রাস্তা বন্ধ এবং সেতুগুলো ভেসে গেছে। কাঠমান্ডুকে চীনের সীমান্তের সাথে সংযুক্ত করা আরনিকো হাইওয়েটি একাধিক পয়েন্টে রাস্তা ধসে যাওয়ার পরে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলের সাথে সংযোগকারী বিপি হাইওয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।

রোববার সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর মুখপাত্র কালিদাস ধৌবোজি জানিয়েছেন, পূর্ব ভারতের সীমান্তবর্তী ইলাম জেলায় পৃথক ভূমিধসে পঁয়ত্রিশ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার থেকে বন্যায় ভেসে যাওয়ার পর এখনো নয়জন নিখোঁজ এবং নেপালের বেশ কিছু জায়গায় বজ্রপাতে আরও তিনজন মারা গেছে। দেশের পূর্ব ও মধ্য অঞ্চলে অবিরাম বর্ষণ জারি রয়েছে।

নেপালের জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র শান্তি মাহাত বলেছেন, ‘নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে। জরুরি পরিষেবা এবং দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া দলগুলোকে ছাড় দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এবং মঙ্গলবার দেশব্যাপী সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। হড়পা বানে ১১ জন নিখোঁজ। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে সময় লাগছে।’ তার কথায়, এমন অনেক এলাকা রয়েছে, যেখানে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কেও বিশদে জানা যাচ্ছে না।

বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনাও। কাঠমান্ডুর বন্যাপ্রবণ এলাকায় উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। নদীগুলো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ফলে নিচু এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে। বাগমতী, হনুমন্তে, মনোহরা, ধোবি খোলা, বিষ্ণুমতি, নাক্কাহু এবং বালখু নদীর জল হু হু করে বাড়ছে। ফলে বসতি এলাকাগুলোতেও জল ঢুকতে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি জেলায় ধস এবং বন্যার আশঙ্কা বেড়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, সুনসারি, উদয়পুর, সাপতারি, সিরাহা, ধনুষা, মহোত্তারি, সারলাহি, রাউতাহাত, পারসা, সিন্ধুলি, দোলাখা, রেমছাপ, সিন্ধুপালচক, কাভরেপালনচক, কাঠমান্ডু, ললিতপুর, ভক্তপুর, মাকওয়ানপুর ও চিটওয়ান।

কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র রিনজি শেরপা জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিমান পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে দুর্যোগের জেরে। তবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক। বর্ষা মৌসুমে বেশিরভাগ পার্বত্য নেপালে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় প্রতি বছর শত শত মানুষ মারা যায়, যা সাধারণত জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে থাকে।