সারাবিশ্ব ডেস্ক : ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসির কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের লাগোয়া জ্ঞানবাপি মসজিদের ভূগর্ভস্থ কক্ষে এখন থেকে (সেলার বা তহখানা) পূজা-অর্চনা করতে পারবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মসজিদ কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও আরজি খারিজ করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এই রায় ঘোষণা দিয়েছেন।

বিচারপতি রোহিত রঞ্জন আগরওয়াল মসজিদ কর্তৃপক্ষের আরজি খারিজ করে বলেন, বারানসির জেলা আদালত এই বিষয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা বহাল থাকবে। ব্যাস তহখানায় হিন্দুদের পূজা-অর্চনা চলবে।

গত ৩১ জানুয়ারি বারানসি জেলা আদালত ওই নির্দেশ জারি করেছিলেন। তহখানায় পূজা করার অধিকার দাবি করে নিম্ন আদালতে মামলা করেছিলেন শৈলেন্দ্র কুমার পাঠক নামের এক ব্যক্তি।

তার আরজি ছিল, তার পূর্বপুরুষ সোমনাথ ব্যাস ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ওই তহখানায় থাকা দেবদেবীর পূজা করে এসেছেন। পূজারির বংশধর হিসেবে তার অধিকার আছে বন্ধ থাকা পূজা-অর্চনা চালিয়ে যাওয়ার। সেই অধিকার তাকে ফিরিয়ে দেয়া হোক।

জেলা আদালত সেই আরজি মেনে নির্দেশ জারি করলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ সেটার বিরুদ্ধে প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি না শুনে হাইকোর্টে আবেদন জানাতে বলেন। হাইকোর্ট দুপক্ষের আরজি শোনার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি রায় স্থগিত রাখেন। আজ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ আবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে পারে।

হিন্দুদের দাবি, কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের মূল গর্ভগৃহ ছিল বিশাল। মোগল আমলে সেই ভিতের ওপর মসজিদ তৈরি হয়। সেটি করার সময় ওই গর্ভগৃহে প্রাচীর তুলে মোট চারটি কক্ষ তৈরি করা হয়। সেই চার কক্ষের একটি ছিল ব্যাস পরিবারের দখলে। তারই নামে পরিচিত হয় ভূগর্ভস্থ ওই ‘সেলার’ বা কক্ষের, ‘ব্যাসজি কি তহখানা’।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের আমলে তহখানায় পূজা–অর্চনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন জেলা আদালত। মসজিদ কর্তৃপক্ষের দাবি, তহখানা তাদের দখলে। তাছাড়া ব্যাসজি কি তহখানায় কোনো বিগ্রহ কখনো ছিল না।

হাইকোর্টের রায়ের পর হিন্দুপক্ষের আইনজীবী প্রভাস গণমাধ্যমকে বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই রায় এক বিরাট জয়। এর ফলে সেখানে এখন বাধাহীন পূজা করা যাবে।