খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ জানুয়ারি ১৪, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 4037 বার
সানজিদা আক্তার সান্তনা : যশোরের হামিদপুরে একটি দোকান থেকে বিএডিসির এমওপি সার উদ্ধারের ঘটনায় হৈচৈ শুরু হয়েছে। ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দের ওই সার দোকানে আসা ও গোপনে বিক্রি প্রক্রিয়া নিয়ে ইতোমধ্যে নানা তথ্য আসছে। ঘটনার নেপথ্যে উঠে আসছে স্থানীয় ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের নাম।
অভিযোগ উঠেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দ সার আত্মসাত করে বিক্রির উদ্দেশে রোববার নসিমনযোগে চেয়ারম্যান স্থানীয় নয়ন এন্টারপ্রাইজে পাঠান। আর এ অভিযোগেই স্থানীয় জনতা সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেয়। এরপর পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত করে এবং আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তুতি নেয়।
একাধিক সূত্র থেকে তথ্য এসেছে, রোববার সন্ধ্যায় এলাকার নসিমন চালক সাইফার আলী ২০ বস্তা সরকারি এমওপি সার নিয়ে বাজারের নয়ন এন্টারপ্রাইজে আসেন। সার, সিমেন্ট ও কীটনাশক বিক্রেতা শাহাব উদ্দিন আহম্মেদের দোকানে ওই সার পৌঁছালে স্থানীয় কৃষক-জনতা খবর পেয়ে দোকান ঘেরাও করে। ঘণ্টা খানেক কৃষকরা ওই দোকানের সামনে হট্টোগোল করে। পরে স্থানীয় চানপাড়া ফাঁড়ি ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
স্থানীয় কৃষক রমজান আলী জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন তার একটি গুদামে ওই এমওপি সার গোপনে রেখে দিয়েছিলেন। রোববার ওই সার বিক্রি করতে একটি নসিমনযোগে নয়ন এন্টারপ্রাইজে পাঠান। এর কিছুদিন আগে কৃষকদের মধ্যে ওই সারের একটি অংশ বিতরন করা হয়। অনেক কার্ডের অনুকুলে সার না দিয়ে প্রতারণা করে আত্মসাৎ করে বিক্রি করেছে। তা রোববার সন্ধ্যায় ধরা পড়েছে।
এদিকে, রাতে স্থানীয়রা জানান, এটা কৃষি প্রণোদনার সার। বিনামূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য। কিন্তু চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন তা আত্মসাৎ করে বিক্রি করেন নয়ন এন্টারপ্রাইজের কাছে। এলাকার নসিমন চালক ও সার বহনকারী সাইফার আলী এবং দোকানি তাদের কাছে চেয়ারম্যানের সার বলে স্বীকারও করেছেন।
নসিমন চালক সাইফার জানিয়েছেন, তিনি চেয়ারম্যানের গুদাম থেকে ওই ২০ বস্তা সার এনেছেন নয়ন এন্টারপ্রাইজে। চেয়ারম্যানের গুদামে আরও সার আছে।
কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) পলাশ কুমার জানিয়েছেন, ‘এটা বিএডিসির বস্তায় সরকারি সার। স্থানীয় জনতার সন্দেহ ওটা কৃষকদের জন্য সরকারি বরাদ্দের সার। আর জনতার অভিযোগে তিনিসহ পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে যান। বিএডিসির সরকারি সার হওয়ায় এখনো সব ঘটনা পরিস্কার হতে পারেননি। ঘটনাস্থলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসবেন। তিনি আসলেই সব পরিস্কার হবে।’
সরকারি এমওপি সার উদ্ধার ঘটনায় অভিযোগ সংক্রান্তে স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের বক্তব্য নেয়ার জন্য কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এছাড়া নয়ন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাব উদ্দিন আহম্মেদের কাছে তিন দফা ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ রিপোট লেখা রাত সাড়ে ৯টায় সার উদ্ধার ঘটনাস্থল হামিদপুরের নয়ন এন্টারপ্রাইজের সামনে জনতা, পুলিশ ও মিডিয়া কর্মীরা অবস্থান করছিলেন।