নিজস্ব প্রতিনিধি: জামাত-বিএনপির একের পর এক নাশকতামুলক হরতাল, অবরোধের কারনে বেনাপোল বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহনে ট্রাক সংকটের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু ট্রাক মিললেও ভাড়া বেড়েছে ট্রাক প্রতি ৫ থেকে ৮হাজার পর্যন্ত। এতে স্বাভাবিক পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি দেশের শিল্প কলকারখানার উৎপাদন চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে। বানিজ্যকে হরতাল, অবরোধের আওতামুক্ত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বানিজ্যিক সংগঠনের নেতারা।

বানিজ্যিক সংশ্লিষ্ট জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে রেল ও সড়ক পথে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি, রফতানি হয় ভারত থেকে। এসব পণ্যের মধ্যে বড় একটি অংশ শিল্পকলকারখানা স্থাপনের যন্ত্রাংশ, উৎপাদন সামগ্রীর কাঁচামাল, কেমিকেল, অক্সিজেন ও খাদ্য দ্রব জাতীয় পণ্য। তবে বর্তমানে চলা জামাত-বিএনপির একের পর এক হরতাল, অবরোধের নামে দেশ জুড়ে সহিংসতা বিরুপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বন্দরটিতে। ভারত থেকে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও নাশকতার ভয়ে অনেকে বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন করতে চাইছেনা। এতে আমদানি, রফতানি পণ্য পরিবহনে ট্রাক সংকটের মুখে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারী। এদিকে ট্রাক সংকটের অজুহাতে সুযোগ নিচ্ছে চালকেরা। আগে বেনাপোল থেকে ঢাকা ট্রাক ভাড়া ১৮হাজার টাকা থাকলেও এখন তা বেড়েছে ২৫হাজারে আর চট্রগ্রাম রুটের ভাড়া ৮হাজার টাকা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে পণ্য পরিবহন খরচ বাড়ায় সরবরাহ যেমন কমেছে তেমনি সময় মত কাচামাল না পৌছানোয় শিল্প কলকারখানার উৎপাদন চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে হরতালের নামে নাশকতা মুলক কর্মকান্ড এড়িয়ে রানৈজতিক কর্মকান্ড পরিচালনার দাবি ব্যবসায়ীদের।

ভারতীয় পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসা ট্রাক চালক সুদিপ দেবনাথ জানান, আমদানি পন্য বন্দরে নিয়ে এসে তাদের অনেকে দুই দিন ধরে দাড়িয়ে আছি। বাংলাদেশি ট্রাক সংকটে ট্রাক থেকে পণ্য আনলোড হচ্ছেনা। তার মত অনেকে ট্রাক সংকটে পণ্য খালাস করতে পারছেন না।

বেনাপোল ট্রাক ট্যান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দীন গাজী জানান, ভারত থেকে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক আছে। বেনাপোল বন্দরে কোন হরতাল নেই। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা মুলক ঘটনায় চাহিদা মত ট্রাক বন্দরে আসছে না। এতে পণ্য খালাসের পরিমান কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে প্রায় ৪৫০ ট্রাক পণ্য খালাস হলেও ট্রাক সংকটে এখন পরিমান কমে দাড়িয়েছে ২০০ ট্রাকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতিতে পড়বে।

আমদানিকারক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বেশি ভাড়া দিয়েও ট্রাক না মেলায় ক্ষতির মুখে পড়েছি। ঢাকার ভাড়া ৫ হাজার ও চট্রগ্রাম রুটে ৮ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে। এতে আমদানি খরচ বাড়ছে। খুব জরুরী ছাড়া পণ্য খালাস নেওয়া হচ্ছে না।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, কাস্টমসের কাজে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে হরতালের কারনে বন্দরে ট্রাক সংকটে জরুরী আমদানি পন্য সব গন্তব্যে পাঠানো সম্ভব হচ্ছেনা। এতে শিল্পকলকারখানায় উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। হরতাল, অবরোধ এড়িয়ে রাজনীতিক কর্মসুচী পালনের অনুরোধ জানান এ ব্যবসায়ী নেতা।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) সজিব নাজির জানান, অবরোধ, হরতালে বেনাপোল বন্দরে স্বাভাবিক বানিজ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা বিরুপ প্রভাব পড়েছে। তবে হরতালকারীদের কোন বাঁধা নেই বন্দরে। বন্দরে নাশকতামুলক কর্মকান্ড এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার আছে। রোববার ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৩৬৮ ট্রাক। রফতানির পরিমান ছিল ১৫৬ ট্রাক। খাদ্য দ্রব জাতীয় পচনশীল পণ্য এসেছে ২৬ ট্রাক।।খালাসের অপেক্ষায় বন্দরে প্রায় ৭শ” বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাক দাড়িয়ে আছে।