নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২২–২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক কঠিন সময় অতিক্রম করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, এই অর্থবছরে অনেক চড়াই-উৎরাই আসবে। তবে এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে।

বাংলাদেশ থেকে প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) ভারতে যে অর্থ পাচার করেছেন, সেটি ভারত সরকার জব্দ করেছে এবং বাংলাদেশকে তা ফেরতে আশ্বাস দিয়েছে দেশটির সরকার। এই তথ্য জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

এ সময় পিকে হালদারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পিকে হালদারের অবস্থা ভালো নেই। ভারত তার সম্পত্তি জব্দ করেছে। আমাদেরকে সেই সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে।’

টাকা পাচার সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচারকারীরা তো টাকা নিয়ে যায় না। তারা টাকা পাচার করে হুন্ডির মাধ্যমে। ডিজিটাল টুলসের মাধ্যমে। এর সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকাগুলো এ দেশের জনগণের। এ টাকা ফিরিয়ে আনা হবে।

ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় সরকার ব্যাংক থেকে এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিভাবে ঋণ নিবে? এ প্রশ্নের উত্তর অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হলেও এর উত্তর দেন সরকারের অর্থসচিব।

সচিব বলেন, সরকার যে এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকার ঋণ নিচ্ছে তা মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর জন্য এটা একটা সুবিধা। কারণ তারা সরকারকে তাদের কাছে পড়ে থাকা অলস অর্থ ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। আর চিন্তার কোনো কারণ নেই। দেশে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ আছে।

এর সঙ্গে যোগ করে অর্থমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৭ বিলিয়ন ডলার। মাত্র ১৩ বছরের ব্যবধানে সরকার এ রিজার্ভকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে। এছাড়া রেমিট্যান্স ১৪% থেকে বেড়ে ২৪% হয়েছে। আর বৈশ্বিক বিপর্যয় না হলে আমরা বিদ্যমান রিজার্ভকে ৪৮ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে পারতাম।

অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তাফা কামাল জানান, এবারের বাজেট প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সহায়ক বাজেট। ব্যবসায়ীসহ সবাই এই বাজেট থেকে উপকৃত হবে। প্রত্যেক গরীবকে সামনে রেখে এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা অনেক সময় বলে থাকেন সুইস ব্যাংকে অমুক বাংলাদেশিদের টাকা রয়েছে। কিন্তু আমরা অনুমান করে, সঠিক তথ্যপ্রমাণ ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হতে পারি না।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত আছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআরের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ উপস্থিত আছেন।