সাইদুর রহমান রাজা, শার্শা অফিস : যশোরের বেনাপোলে পারিবারিক কলহের জের ধরে আপন ভাতিজা হারুন গংয়ের হাতে প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা “মগর আলী” খুন হওয়ায় এ হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে সরকারি দল ধ্বংশের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াত-বিএনপির পেতাত্মারা। তারা হাইব্রীড আওয়ামীলীগের ঘাড়ে ভর করে সদা হাস্যজ¦ল মিষ্টভাষী কাগমারি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মগর আলী হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

বলেন, স্থানীয় একটি কূ-চক্রীমহল মগর আলী হত্যাকান্ডকে তাদের রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আওয়ামীলীগ ধ্বংশের মহাযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে।

জানাযায়, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মগর আলীর আপন ভাতিজা হারুন আলীকে আসামী করে ১০ জনের নামেসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের নামে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-২৭, তারিখ-১৮.০৪.২০২২। যার বাদি হয়েছেন নির্মমভাবে হত্যার শিকার মগর আলীর ছেলে হোসেন আলী। এ মামলায় প্রকৃত স্বার্থান্বেশী খুনী চক্রসহ এলাকার কিছু নিদোর্শ বর্ষিয়ান আওয়ামীলীগ নেতাদের নাম জড়িয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এলাকার কতিপয় হাইব্রীড আওয়ামীলীগ নেতা নামধারি মগর আলীর পরিবারের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের পাশে থাকার থ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করিয়েছে। তারা সুযোগ সন্ধানী বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ।

বেনাপোল পোর্ট থানায় মগর আলীর ছেলে হোসেন আলীর লিখিত এজাহার সুত্রে জানাযায়, মগর আলীর সাথে তার ভাই আরব আলী ও ভাতিজা হারুন আলী গংদের সাথে জমি জায়গার বিষয় নিয়ে পূর্ব শত্রুতা চলে আসছিল। হঠাৎ গত শনিবার(১৬ এপ্রিল-২২) সন্ধ্যা ৭টার সময় প্রতিদিনের ন্যায় তার পিতা মগর আলী ইফতারি শেষে বাজার হতে বাড়ী ফেরার পথিমধ্যে পোর্ট থানাধীন কাগমারি গ্রামস্থ রেললাইন সংলগ্ন আবুল হোসেনের লেদের দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌছালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারপিট শুরু করে তার ভাতিজা হারুন গং। এসময় হারুন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার হাতে থাকা লোহার বাটালি দিয়ে পেটের বামপাশে আঘাত করে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। মাটিতে পড়ে গেলে তার সাথে থাকা অন্যান্যরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা চাকু দিয়ে ঘাড়ে ও পিঠে আঘাত করে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে এবং লোহার রড ও লাঠিসোঠা দিয়ে এলাপাতাড়ি মারপিট করে।
খবর পেয়ে তাদের বাড়ি থেকে তার বড় ভাই হাসান আলী(৪০), ভাইপো ইয়াছিন(১৫) সহ তারা ছুটে আসলে তাদের চাচা আরব আলীসহ অন্যান্যরা হাসানের মাথায় ও শরীরে আঘাত করে। এসাথে ভাইপো ইয়াসিনকে ছুরিকাঘাতসহ তাকেও মারধর করে। এসময় তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে তাদের খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা তার পিতা মগর আলীসহ বড় ভাই হাসান এবং ভাইপো ইয়াসিনকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নাভারনে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসাপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার পিতা মগর আলীর মৃত্যু হয়। এসাথে তার বড় ভাই এবং ভাতিজাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে এজাহারে লিপিবদ্ধ করা হয়।

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) কামাল হোসেন ভুঁইয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মগর আলী হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ্যসহ ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এজাহারের ১নং আসামী মূল অভিযুক্ত আরব আলীর ছেলে হারুন(৪৫) ও ৭নং আসামী (আওয়ামীলীগ নেতা) মৃত নুরুল হক পাকানীর ছেলে সামছুর রহমান(৬০) কে আটক করে যশোর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।