রাজনীতি | তারিখঃ জুলাই ২৬, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 12337 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটাবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ নেতাদের কে মাঠে ছিল, কে ছিল না- তা নিয়ে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সমন্বয় সভায় হট্টগোল ঘটেছে। এ কারণে তড়িঘড়ি করে শেষ করে দিতে হয়েছে সভা।
বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী ও কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, দলীয় সংসদ সদস্য, এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, সমন্বয় সভায় ঢাকা মহানগর উত্তরের সংসদ সদস্যরা, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা বক্তব্য রাখেন। নেতারা যখন বক্তব্য দেন, কর্মীরা তখন হট্টগোল শুরু করেন।
হট্টগোলের কারণ জানতে চাইলে একাধিক সূত্র বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দুষ্কৃতকারীরা সহিংসতা চালায়। এ সময় হাইকমান্ডের নির্দেশে যারা প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেননি, তারা যখন নিজের অবস্থান জাহির করেন, তখন সেই এলাকার নেতারা বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। নেতাকর্মীদের হট্টগোল দেখে অনেক নেতাকেই বক্তব্য থেকে বসিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
জানা গেছে, পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন, মিরপুর ৯৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন নেতা যখন বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজের মাঠে থাকার কথা বলেন, তখন উপস্থিত অনেকে প্রতিবাদ করেন। নেতাকর্মীদের হট্টগোলের কারণে তাদের বসিয়ে দেওয়া হয়।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, মিরপুরের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে না থাকলেও তার পক্ষে সেই এলাকার এক কাউন্সিলর গুণগান করতে শুরু করেন। তখন নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। বলতে থাকেন, তিনি (ইলিয়াস মোল্লা) তো দেশেই নেই। তার আবার অবস্থান কী?
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নেতাদের কাছ থেকে বিবরণ শুনতে কয়েকজনকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বক্তব্য দিতে এসে অনেকে নিজের গুনগান গাইতে শুরু করেন। আবার কোটা আন্দোলন দমনে মাঠে ছিলেন না- এমন নেতাদের বক্তব্য দিতে দেখে অনেকে উত্তেজিত হয়ে যান। তখন তাদের আমরা বসিয়ে দিই।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, যখন যাকে বক্তব্য দিতে দিই, তখন তিনি তার নিজেরটা বলেন। মাইক ধরলে সবাই তার বীরত্বের কথা বলেন। আবার দুই-চার জনের নাম বলেন, পাঁচ-সাত জনের নাম বলা হয় না। তখন পাঁচ-সাত জন একটু ক্ষেপে যান। তখন অন্যরা বলেন, আমরাও তো ছিলাম।
তিনি বলেন, কোনো থানার সভাপতি, কোনো ওয়ার্ডের সভাপতি ও কোনো ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বক্তব্য দিয়েছেন। এর আগে, সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সূত্র জানিয়েছে, সভার পর কয়েকজন নেতাকে নিয়ে নিজের জন্য সংরক্ষিত কক্ষে বসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংঘাত, সহিংসতা প্রতিরোধে দলের ব্যর্থতা নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, যা ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত গড়ায়। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা ওই দুই নেতাকে নিবৃত্ত করেন।