কীভাবে হবে সেনা কর্মকর্তাদের অপরাধের বিচার? যা জানা যাচ্ছে
- আপডেট: ১১:৩৩:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত বছরের আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে তীব্র আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামল।
এই দীর্ঘ সময়ে গুম, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তদন্ত শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ সংক্লান্ত দুটি মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন–ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ, র্র্যাবের দুই সাবেক মহাপরিচালক এবং ১৪ জন বর্তমানে কর্মরত ও ১০ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে হবে।
এ ঘটনায় মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে এত সংখ্যক কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, সামরিক বাহিনীর কোনো সদস্য বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ ওঠে তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত বা বিচারের ক্ষেত্রে কোন আইন প্রযোজ্য হবে?
এক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর নিজস্ব আইনে সামরিক আদালতে, নাকি প্রচলিত ফৌজদারি আইনে বিচার করা যাবে- এমন প্রশ্নও তৈরি হয়েছে।
এদিকে, গত ৬ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে এক সংশোধনী এনেছে।
ওই সংশোধনী অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে সেই ব্যক্তি সরকারি চাকরিজীবী হলে ওই পদে থাকতে পারবেন না বলে ট্রাইব্যুনালের একাধিক প্রসিকিউটর জানান।
এ সংক্লান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবী এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের বিচারিক ব্যবস্থায় এ ধরনের মামলার আরও উদাহরণ আছে।
তারা জানান, এর আগে ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলায় তৎকালীন তিনজন সেনা কর্মকর্তা, যারা র্যাবের অধীনস্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
সে সময় তাদের সেনা বাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছিলো। পরে সাবেক ওই তিন কর্মকর্তার বিচার প্রচলিত ফৌজদারি আইনেই হয়।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, পেশাগত কাজের সময় সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য কোনো অপরাধ করলে তার সামরিক আইনে বিচার হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য পেশাগত কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো অপরাধ করেন, তাহলে সেটি সামরিক আইনে বিচার হবে। কিন্তু যদি সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করেন, তখন তার বিচার সাধারণ আদালতে হতে কোনো বাধা নেই। ইতোপূর্বে এ ধরনের বিচারের একাধিক নজির রয়েছে।’