নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বাড়তি ভাড়া চাওয়ার জেরে সৃষ্ট বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে যাত্রীদের মারধরে বাসের চালক ও সুপারভাইজারের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাসটি ঢাকার মিরপুর থেকে গাজীপুরের চন্দ্রার দিকে যাচ্ছিল।

সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়ার ইপিজেড এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পিটুনির শিকার দুই পরিবহন শ্রমিককে উদ্ধার করে গাজীপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা মারা যান।

নিহত চালক সোহেল রানা বাবুর (২৬) বাড়ি গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় এবং সুপারভাইজার হৃদয়ের (৩০) বাড়ি ময়মনসিংহ ফুলপুরে। চন্দ্রা থেকে ঢাকার মিরপুর রুটে চলাচলকারী ইতিহাস পরিবহনের এই দুই শ্রমিক থাকতেন মিরপুরেই।

পুলিশের ভাষ্য, বাড়তি ভাড়া চাওয়ায় যাত্রীদের হামলার শিকার হন ইতিহাস পরিবহনের চালক বাবু ও সুপারভাইজার হৃদয়। মারধরে গুরুতর আহত হলে তাদের উদ্ধার করে গাজীপুরের তেতুইবাড়ি এলাকার শেখ ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়।

বাসচালকের সহকারীর বরাত দিয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, “মিরপুর থেকে ছেড়ে আসা বাসটিতে বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক শুরু হয় কর্মীদের। এরই মধ্যে এক যাত্রী তাদের মারধরের হুমকি দেয়। ইপিজেড এলাকায় পৌঁছালে ওই যাত্রীর ডাকে কয়েকজন স্থানীয় তরুণ বাসটিতে উঠে চালক ও সুপারভাইজারকে পেটাতে শুরু করেন। এ সময় বাসের হেলপার পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় দুই শ্রমিককে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আইনি কার্যক্রম চলমান। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।”

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকা থেকে গ্রামের দিকে ছুটছে মানুষ। বিপুল পরিমাণ এই মানুষকে পরিবহনের জন্য প্রতি বছরই নিয়মিত বাস সার্ভিসের পাশাপাশি বাড়তি লাভের আশায় অননুমোদিত রুটে যাত্রী পরিবহন করে ঢাকা শহরের অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাসগুলো। আবার ঈদে পরিবহন শ্রমিকদের একাংশও ফেরে গ্রামে। ফলে ঢাকায় দেখা দেয় পরিবহন সঙ্কট।

যাত্রীদের অভিযোগ, এই সুযোগে যে স্বল্পসংখ্যক বাস চলে তারা দুই থেকে তিনগুণ কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায় করে। সাভারের বাসিন্দা মির্জা দেলোয়ার ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আজ (সোমবার) জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে হয়েছিল। ঠিকানা পরিবহনের বাস জোরপূর্বক দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি পরিবহনের চালকের সহকারী বলেন, “ঈদে একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সবাই নিচ্ছে।”