সনতচক্রবর্ত্তী: ফরিদপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মো. আব্দুর রহমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হওয়ায় তাকে সোনার নৌকা উপহার দিয়েছে বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগ।

গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর হাতে সোনার এ নৌকা তুলে দেন পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আকবর ও এমএ মতিন।

বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্থানীয় পৌর বাস টার্মিনাল প্রাঙ্গণে এ গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট লিয়াকত হোসেন শিকদার। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর সহধর্মিণী ও মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. মির্জা নাহিদা হোসেন বন্যা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান তার বক্তব্যের শুরুতেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছন উল্লেখ করে বলেন, আজ এক ভিন্ন পরিচয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। একজন রাজনৈতিক কর্মী দলের দ্বায়িত্ব পায়, তারপরে সেই দল যখন ক্ষমতায় যায় সেই ক্ষমতার একজন অংশীদার হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।

তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, তারা বলেছিলো জনগণ ভোট দিতে আসবে না। সবকিছু মিথ্যা পরিণত করে ৭ তারিখে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যেয়ে ভোট দিতে পেরেছে। ওদের কথা সঠিক হয়নি। সামনে আরো নির্বাচন আছে। সেই নির্বাচনে আপনারা আসেন। সেই নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আগামী পাঁচবছর এই সরকার তার দ্বায়িত্ব পালন করে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সারাবিশ্বের সৎ তিনজন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একজন।

মন্ত্রী বলেন, একমাত্র অর্থই এই সমাজের মানুষকে বন্দি করতে পারেনা। নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। এই ফরিদপুর-১ আসনের সবচেয়ে বড় অর্থ লুন্ঠনকারী ৯২কোটি টাকা খরচ করেও আপনাদের মাথা কিনতে পারে নাই। কোন অবৈধ দখলদার, লুটেরার স্থান এই ফরিদপুরে হবেনা। এই ফরিদপুরকে একটি শান্তির জায়গা করে যেতে চাই। আর এই তিন উপজেলাকে আমি উন্নয়নের এমন মহাসড়কে নিয়ে যাবো, যাতে আমার মৃত্যুর পরেও মানুষ আমাকে না ভুলে।

তিনি বলেন, আমি প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করিনা। যারা আমাকে ভোট দিতে পারেন নাই তাদের প্রতিও আমার কোন আক্ষেপ নাই। নির্বাচন পূর্ববর্তী যা কিছু হয়েছে সবকিছু ভুলে গিয়ে একটা কাতারবদ্ধ উন্নয়নের মহাযজ্ঞ আমি বাস্তবায়ন করতে চাই। তাই বলে আমার যেই কর্মীরা শীতের রাতে জেগে জেগে আমাকে ফোন বলেছে, আপনার জন্য কেন্দ্র পাহারা দিচ্ছি, তাদের কখনো ভুলবোনা।

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া। সভা সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিরদাহ পিকুল।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক এসএম ইশতিয়াক আরিফ, বোয়ালমারী পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সেলিম রেজা লিপন, শ্যামল ব্যানার্জী প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন, সারা বাংলাদেশের দ্বায়িত্ব এখন মন্ত্রী আব্দুর রহমানের হাতে। তারপরেও তিনি ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির নেতৃত্ব দিবেন। আমরা তার নেতৃত্বে ফরিদপুর জেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করবো। তিনি শুধু ফরিদপুর-১ আসনেরই এমপি নন, তিনি ফরিদপুরের চারটি আসনের জনগণের নেতা। এসময় সভামঞ্চে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গণসংবর্ধনাস্থলে পৌছালে পুলিশের একটি চৌকস দল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমানকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।