নিজস্ব প্রতিবেদক : পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ১ নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

বুধবার সকালে সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগর কাশিমপুর জরুন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া জামাল উদ্দিন নামে আরও ১ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ২ জন ঢাকা মেডিকেলে এসেছিল। এদের মধ্যে ইসলাম গার্মেন্টসের আঞ্জুয়ারা খাতুন নামে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ জামাল উদ্দিনের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা চলছে।

গুলিবিদ্ধ জামাল উদ্দিন বলেন, আমি ইসলাম গার্মেন্টসে চাকরি করি। সকালে অফিসে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে আমি গুলিবিদ্ধ হই। পরে প্রথমে উদ্ধার করে আমাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছি।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ডিবি) মোহম্মদ ইব্রাহিম খান জানান, সকালে শ্রমিক বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।

এতে শ্রমিক মারা যাওয়ার কথা নয়। গুরুতর আহত অবস্থায় একজন নারী শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ন্যূনতম বেতন সাড়ে ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। গতকাল পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রস্তাব করে মজুরি বোর্ড। পরে মজুরি বোর্ড ঘোষিত বেতন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ সকাল থেকে কোনাবাড়ি এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্টঅল সোয়েটারসহ আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করলে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

সকাল ৮টার দিকে কয়েকশ শ্রমিক কাশিমপুরের জরুন মোড়ের সামনে একত্রিত হয়ে লাঠি সোঁটা নিয়ে মিছিল করতে থাকে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে উত্তেজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এক পর্যায়ে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রওশন মার্কেটের হয়ে হাতিমারার দিকে এগিয়ে যায়।