সনতচক্রবর্ত্তী: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নাশকতা, গাড়ি ভাংচুর ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মামলায় বিএনপি নেতা রইসুল ইসলাম পলাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রবিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলা সদর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পলাশ বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।

থানা সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির পায়তারা করার লক্ষে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার চতুল ইউনিয়নের ভাটপাড়া-সাইনবোর্ড এলাকায় পরপর বেশ কয়েকটি বোমা ও ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় এবং চলন্ত গাড়ি ভাংচুর ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানার উপপুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার সেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে থানা পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়। খবর পেয়ে বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সড়কে দেয়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দু’টি সাউন্ড গ্রেনেডসহ ৮ রাউন্ড শর্টগানের গুলি চালায় এবং ঘটনাস্থল অবিষ্ফোরিত ৩টি ককটেল, কয়েকটি বিষ্ফোরিত ককটেলের অংশ বিশেষ, বাঁশের লাঠি, ভাংচুরকৃত গাড়ির কাচের টুকরা, ইটের টুকরা আলামত হিসেবে জব্দ করে। আহত পুলিশ সদস্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ একাধিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন উপজেলার শেলাহাটি গ্রামের জিয়া মেম্বার, বেড়াদি গ্রামের জাকির হোসেন টিআই, শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রইসুল ইসলাম পলাশ, গুনবহা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার সাহা, গুনবহা গ্রামের জাহিদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব মো. জাকির হোসেন চৌধুরী, পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইকরাম হোসেন ও আব্বাস আলী। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব।

অপরদিকে বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি লক্ষ্যে ডাকা হরতালের বিরুদ্ধে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। রাতে নাশকতা ছাড়া বোয়ালমারীতে হরতালের কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। দোকানপাট ও যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।