খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ অক্টোবর ২২, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1948 বার
স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার কির্তীপুর গ্রামে অসুস্থ মা হামেদা খাতুন (৭১) এবং প্রতিবন্ধী বোন সুফিয়া বেগম (৪১)কে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হামেদা বেগমের সন্তান আব্দুস সামাদ ও আব্দুল মজিদ এর বিরুদ্ধে। তারা কির্তীপুর গ্রামের মৃত সামছুর রহমানের পুত্র।
বৃদ্ধা হামেদা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ব্যাংকে চাকুরী করতো। আমাদের সংসারে ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। বড়মেয়ে সুফিয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। স্বামী চাকুরীতে থাকা অবস্থাতেই ঘরবাড়ি সব করে গিয়েছিল। তিনি পেনশনের টাকাও সব সন্তানদের মধ্যে বন্টন করে দেন। আমার জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং প্রতিবন্ধী মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তার নামে ৭ শতাংশ জমি এবং নগদ ২লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে আমি আমার ভাগের টাকা ২ ছেলের মাঝে সমান ভাগ করে দিই এই শর্তে যে তারা আমাকে ও আমার মেয়েকে দেখবে। ৪ বছর আগে স্বামী মারা গেলে ছোট ছেলে আব্দুল মজিদ আমার এবং প্রতিবন্ধী মেয়ের দায়িত্ব নেয় কিন্তু ২ বছর পরেই সে এবং তার স্ত্রী আমাদেরকে দেখবেনা বলে জানিয়ে দেয়। এরপর আমার বড় ছেলে আব্দুস সামাদ আমাদের দুজনের দায়িত্ব নিলে এত দিন তার সাথেই স্বামীর নির্মাণ করা ঘরেই ছিলাম। প্রতিবন্ধী বোনকে দেখবে এই প্রলোভন দেখিয়ে সে মেয়ের নামে থাকা জমি ও টাকা নিজের নামে করে নিয়ে এখন তার স্ত্রীর সাথে মিলে আমাকে আমার স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার ডায়াবেটিস, হাইপ্রেসার, কিডনির সমস্যা সহ আরও অনেক ধরনের শারীরিক জটিলতা আছে। ২০/২৫ দিন আগে হঠাৎই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ অবস্থায় ২দিন আমি ঘরে পড়েছিলাম। কেউ আমাকে দ্যাখেনি, খোঁজ নেয়নি, এমনকি খেতেও দেয়নি। ছেলের বৌ বলে যে, আমি মরে গেলেও সে আমাকে দেখবেনা। আমার এই দূরাবস্থার কথা শুনে মেঝো মেয়ে আমাকে এবং প্রতিবন্ধী বড় মেয়েকে তার কাছে নিয়ে আসে। এখন আমি তার বাড়িতে অবস্থান করছি। ছেলেরা আমার কোন খোঁজ নেয়না।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সুফিয়া বেগম বলেন, ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে বলে আমার নামে থাকা জমি ও নগদ ২ লক্ষ টাকা নিয়ে এখন ভাই এবং ভাবী বলছে তারা আমাদের দেখতে পারবেনা। তারা আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এখন যদি তারা আমাদের না দ্যাখে তাহলে আমার জমি ও টাকা ফিরিয়ে দিক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আব্দুস সামাদ বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর ছোটভাই তাড়িয়ে দিলে বোন আর মা আমার কাছেই ছিলো। সংসারে একসাথে থাকলে একটু ঝামেলা ঝঞ্জাট হতে পারে। মা এখন আমার মেজো বোনের বাড়ি আছে। আমি ফোন করে মায়ের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে আবারও আমার কাছে নিয়ে আসবো। তবে কতদিনের মধ্যে নিয়ে আসবেন এই প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি।
ঝিকরগাছা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক খোকন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। সন্তানেরা যাতে তাদের মা ও বোনকে নিজেদের কাছে নিয়ে আসে সেটার জন্য আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।