রাজনীতি | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 13688 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাদানকারীদের ওপর ইতোমধ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই সমস্ত ব্যক্তিরা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। যদি কারো ভিসা থেকে থাকে তাহলে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আওয়ামী লীগের মধ্যে যে সমন্বয়হীনতা সেটি আবারও ফুটে উঠেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা স্ববিরোধী কথা বার্তায় মেতে উঠেছেন। কেউ এটিকে ষড়যন্ত্র বলছেন, আবার কেউ বলছেন এটি নিয়ে তারা চিন্তিত নন। আসলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থা কি সেটি অস্পষ্ট এবং বিভ্রান্তিকর।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হল:
দুই সেলফিতেই রাজনীতির ফয়সালা হয়ে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না। ভিসানীতি-নিষেধাজ্ঞা হলে ক্ষতিটা তাদেরই যারা নির্বাচনে বাধা ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। ভিসানীতি বাস্তবায়নের বাস্তবতাটা কী সেটা দেখার বিষয়।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, ভিসানীতির ফলে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ছে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠি। কারণ এই ভিসা নীতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের উপরে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তারা ভিসা নীতি প্রয়োগ শুরু করেছে। কিন্তু কী কারণ সেটা তারা জানে। তবে আমাদের সরকার আগে থেকে বলে আসছে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের আয়োজনে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বলেন, আমরা আমেরিকা যাব না। তাতে এই বাংলাদেশ নির্বাচন উন্নয়ন কোনকিছুই বাধাগ্রস্থ হবে না। ১৯৭১ সাল থেকে শুরু করে যখনই নির্বাচন এসেছে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই আমাদের পক্ষে ছিল না। এখনও পক্ষে নাই।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেছেন, ভিসানীতি ভোগাস। সব ফাঁকা আওয়াজ, মাঠ অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা। লবিস্টের ফিস হালাল করার পাঁয়তারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ দেশের জন্য লজ্জাজনক। এটা যেকোনো দেশের জন্য লজ্জাজনক হবে। তবে এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের এসব বক্তব্যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা পরোয়াই করছেন না, আবার কেউ ক্ষোভ ঝাড়ছেন বা এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করছেন। আসলে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি? যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কি আসলেই আওয়ামী লীগের কোন মাথাব্যাথা নেই নাকি এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য এখনও বের করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ নেতাদের বাইরে সরকারের কিছু মন্ত্রীও ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ চিন্তিত নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অন্যদের ওপর ক্ষমতা প্রভাব খাটাতে পারে। কিন্তু আমরা এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।
এছাড়া গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে সরকার নয়, বিরোধী দল চাপে আছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।