নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হরতাল-অবরোধসহ সব ধরনের কর্মসূচির জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বহস্পতিবার ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে সিলেটের উদ্দেশ্যে রোডমার্চ কর্মসূচির প্রথম পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, খালেদা জিয়া ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে রোডমার্চ কর্মসূচি করছে বিএনপি।

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেশ আলী মামুন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা আগুন দিয়ে মানুষ মারি না, আমরা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াই না। আমরাতো পথচারীদের বস্ত্র হরণ করি না। আমরা এখনও হরতাল দিইনি। হরতাল দেওয়া দরকার আছে? অবরোধ দেওয়ার দরকার আছে? আপনারা পালন করবেন?’

উত্তরে নেতাকর্মীরা ‘হ্যা’ বললে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘ঠিক আছে, আপনাদের রায় পেলাম। আমরা হরতাল করিনি। কিন্তু করব না সেই প্রতিজ্ঞাও করিনি।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের চাপের কারণে হরতাল, অবরোধ যা যা করা দরকার, গণতান্ত্রিক পন্থায় এই অবৈধ সরকারকে মাটিতে বসিয়ে দেওয়ার জন্য দল, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সব ধরনের কর্মসূচি হবে।’

সেই জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান গয়েশ্বর চন্দ্র। বলেন, ‘আমাদের এবারের আন্দোলন ডু অর ডাই। হয় মরব; নয়তো লড়ব। দেশের মানুষকে মুক্ত করব, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব এবং দেশের মানুষের মালিকানা ফেরত দেব।’

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই সরকারকে আমি সরকার বলি না-এরা একটি রেজিম। এদের প্রতি শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষ নয়; বিদেশিদেরও আস্থা নেই।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরে সবচেয়ে বড় সংগ্রাম, এই মুক্তির সংগ্রামে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।’

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজ এই রোডমার্চ উপলক্ষে ভৈরবের রাস্তায় লাখ মানুষ যেভাবে জেগে উঠেছে, আমরা বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে ঘরে ফিরব।’

সোয়া ১১টার দিকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বিপুল সংখ্যক গাড়িবহর নিয়ে নেতাকর্মীরা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে রোডমার্চ শুরু করে। পথে পথে আরও নেতাকর্মী যোগ দিচ্ছেন বলে জানান রোডমার্চে থাকা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ রোডমার্চকে সমর্থন দিচ্ছেন।’