সানজিদা আক্তার সান্তনা : অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি আবুল হাসেম খানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে দুদক। দুদক যশোর কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোশাররফ হোসেন মামলার দির্ঘ তদন্ত শেষে মঙ্গলবার আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন। ঝিনাইদহ থেকে অবসরে যাওয়া আবুল হাসেম খানের বিরুদ্ধে চার্জশিটে এককোটি ৪৫ লাখ ৩৯ হাজার ১শ’ ৪৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল আমিন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মো. আবুল হাসেম খান ১৯৭৭ সালে এসএসসি পাস করার পর পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করে । ১৯৮৩ সালে সাব ইন্সপেক্টর ও ১৯৯৭ সালে পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে চাকরিরত অবস্থায় ২০১৮ সালে অবসরগ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে আনা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু হয়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করা হয়। যার আলোকে ২০২০ সালে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে বাস্তবে অমিল পাওয়া যায়। এঘটনায় মামলা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, সম্পদ বিবরণী নোটিশের প্রেক্ষিতে মো. আবুল হাসেম খান তার নিজ নামে ১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৪০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪২ লাখ ২১ হাজার টাকার সম্পদ থাকার ঘোষণা দেন। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে ভিন্নচিত্র। দুদকের তদন্তে উঠে আসে তার যশোর পৌরসভার বারান্দিপাড়ায় চারতলা একটি বিল্ডিং রয়েছে ও পাশে আরেকটি একতলা বিল্ডিং রয়েছে। এছাড়া মণিরামপুরের দূর্গাপুরে একটি একতলা বাড়ি ও তিনটি সেমিপাকা বিল্ডিং রয়েছে। নিজ গ্রামেরবাড়ি যশোর সদর উপজেলার কচুয়া গ্রামেও রয়েছে দুইতলা বাড়ি রয়েছে। দুদকের তদন্তে উঠে আসে তার এককোটি ৭৬ লাখ ৭২ হাজার ১শ’৪৯ টাকার স্থাবর ও ৪০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। সর্বমোট এককোটি ৮৭ লাখ ৬০ হাজার ১শ’৯৯ টাকার তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি এককোটি ৪৫ লাখ ৩৯ হাজার ১শ’ ৪৯ টাকার সম্পদ গোপন করেন। ওই সম্পদের অর্জনের বিপরীতে তার বৈধ আয় পাওয়া যায় ৫৭ লাখ ৬১ হাজার ৭শ’৬৩ টাকা। অর্থাৎ তিনি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এককোটি ২৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩শ’৮৬ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। অসব অভিযোগ দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঙ্গলবার যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন।