আসাদুজ্জামান আসাদ : ঈদের ছুটি শেষে সচল হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল; তবে বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে আরও ক’দিন সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

রোববার সকাল থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত ১২৮ ট্রাক পন্য ও ১১টি চ্যাসিজ ভারত থেকে আমদানি হয়েছে এবং ৭৫ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে বলে মুক্তা ট্রেডিং কর্পোরেশন এর বর্ডারম্যান জানিয়েছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ২৭জুন মঙ্গলবার ছিল সরকারের নির্বাহী আদেশে ছুটি। ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বুধবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটিতে ৫দিন বেনাপোল বন্দরের সকল কাজকর্ম বন্ধ ছিল। ২জুলাই রোববার বেনাপোল শুল্কভবন ও বেনাপোল বন্দর পুরোদমে বন্দর সচল হয়েছে।

রোববার সকাল থেকে বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে বলে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১) নাছির উদ্দিন জানান।

তিনি বলেন, “ঈদুল আযহা উপলক্ষে পাঁচ দিন বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হলেও ঢিমেতালে চলছে। তবে ২/১ দিনের মধ্যে পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। সরকার ঈদের তিন দিন আগে পরে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখায় বন্দর থেকে কোন পণ্য খালাসও হবে না।

“আমদানিকারকরা গ্রামে ঈদ করতে যাওয়ায় এখনো ঢাকায় তাদের অফিস খোলেনি। তাই বন্দর থেকে পণ্য খালাসও তেমন নেওয়া হচ্ছে না।”
পুরোপুরি কাজ শুরু হতে আরো দুই তিন দিন লেগে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে ঈদের ছুটিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে টানা পাঁচ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় ওপারের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় তীব্র ট্রাকজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক বন্দর এলাকা, বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁ পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান।

এদিকে বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন-৮৯১ এর সভাপতি আক্তারুজ্জামান বলেন, “প্রচণ্ড গরম ও হঠাৎ বৃষ্টির কারণে হ্যান্ডেলিং শ্রমিকরা স্বস্তিতে কাজ করতে পারছেন না।প্রচণ্ড তাপদাহে ও বৃষ্টির বাগড়ায় শ্রমিকদের কাজ এগিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।”

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, “বন্দরে পণ্যজট কমাতে দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রচণ্ড গরমে বন্দর অভ্যন্তরে কিম্বা ওপেন ইয়ার্ডে হ্যান্ডেলিং শ্রমিকরা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।”