আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : কমিটির কার্যক্রমের উপর মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আছে, সেই আদেশের অনুলিপি জমা দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছিল নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে। সেই রায়কে পাশ কাটিয়ে সরকারি দপ্তরের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হলো প্রধান শিক্ষক। তাও আবার এমন একজনকে যার ঐ পদে আবেদন করারই যোগ্যতা নেই।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের সুরতজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। গত ১৩ মে ২০২৩ তারিখে উক্ত স্কুলে মোঃ আনারুল ইসলামকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এর পূর্বে গত ১১ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ যার নামে স্কুল সেই মরহুম মীর সুরতজান এর দৌহিত্র মীর বাবরজান বরুণ লিখিতভাবে কমিটির কার্যক্রমের স্থগিতাদেশের ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন এবং উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার আবেদন করেন।

এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর পরিশিষ্ট ঘ এর ৩০ নং পৃষ্ঠার ৮ নং ক্রমিকের শর্তানুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করতে হলে নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামুলক হলেও ডিজির প্রতিনিধি, ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে দুই বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আনারুল ইসলামকে সুরতজান হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগকারী মীর বাবরজান বরুণ বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরেও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ডিজির প্রতিনিধি এবং জেলা শিক্ষা অফিসের পরস্পর যোগসাজশে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে হাইকোর্টের রায়কে অবজ্ঞা করে একজন অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি এরসাথে জড়িত সকলের শাস্তি দাবি করছি।

ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর বলেন, হাইকোর্টের রায়ের ব্যাপারে আমার জানা নেই। আনারুল ইসলাম আমাকে কাগজপত্র দেখিয়ে বলেছে সব ঠিক আছে। তারপরও আপনি যেহেতু বলছেন, আমি উনাকে ডেকে জিজ্ঞেস করে আপনাকে জানাবো আসলে কি হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাফুজুল হোসেন বলেন, যেহেতু কোর্টের স্থগিতাদেশের ব্যাপারে আমার দপ্তরে অবগত করণ করা হয়েছিল তাই এই নিয়োগে কোর্টের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন ছিলো। যেভাবেই হোক বিষয়টি আমার নজর এড়িয়ে গেছে এবং স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিখিত ভাবে আমাদেরকে জানিয়েছিল যে, প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো মামলা নেই। আমরা শুধু পদের এগেইনেস্টে অনুমোদন দান করি। বাকি কাজ অনেক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। নিয়োগ দানের মুল দায়ভার ডিজির প্রতিনিধি এবং স্কুল ম্যানেজিং কমিটির। ৩ বছরের অভিজ্ঞতা না থাকা ব্যক্তি কিভাবে নিয়োগ পেলো এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি লিখিত অভিযোগ দেন। আমরা যেমন নিয়োগ দিতে পারি তেমনি বাতিলও করতে পারি।