সানজিদা আক্তার সান্তনা : সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের দায়ে দুদকের মামলায় যশোরের মণিরামপুরে এক ঠিকাদারের পৃথক ধারায় ২২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার স্পেশাল জজ (জেলা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খলিলুর রহমান মণিরামপুর উপজেলার কপালিয়া গ্রামের এরশাদ আলী শিকদারের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি সিরাজুল ইসলাম।

আদালত সূত্র জানায়, খুলনা-যশোর নিষ্কাশন পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৮০ জন শ্রমিক নিয়ে মণিরামপুরের হরিনদী/শ্রীনদী খনন কাজের জন্য একটি দল গঠন করা হয়। যার নাম দেয়া হয় লেবার কন্ট্রাকটিং সোসাইটি। যার দলনেতা ছিলেন আসামি খলিলুর রহমান। ২০০০-২০০১ অর্থবছরে হরিনদী পুনঃখননের জন্য খলিলুর রহমানের দলকে বরাদ্দ দেয়া হয়। এ প্রকল্পের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় কার্যালয় থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা আসে। কিন্তু খলিলুর রেজুলেশন জাল করে মণিরামপুর উপজেলায় সোনালী ব্যাংক রাজগঞ্জ শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে এক লাখ ৭৩ হাজার ৮২৪ টাকা উত্তোলন করেন। ওই টাকা উঠিয়ে শ্রমিকদের টাকা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি নজরে আসে দুদকের। ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর জেলা দুদকের যশোরের সহকারী পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

উপসহকারী পরিচালক এসএম বোরহান উদ্দীন খলিলুর রহমানকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে ৪০৬ ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড, ৪২০ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড, ৪৬৭ ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদন্ড, ৪৬৮ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৪৭১ ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিামানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। একই সাথে আত্মসাৎ করা এক লাখ ৭৩ হাজার ৮২৪ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়। আসামিকে প্রদত্ত সকল ধারার দণ্ড একত্রে চলবে।