নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল লিটনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকদিন যাবত মিথ্যা বানোয়াট ও বিভ্রান্তকর অপপ্রচার চলছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কিছু ভুৃইফোড় অনলাইন পোর্টালে। আর এ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায় যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সাবেক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন আমার বিরুদ্ধে কেউ ৫০ পয়সার দূর্নীতিও প্রমাণ করতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ২টার সময় বেনাপোল বাজারে অবস্থিত আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

আশরাফুল আলম লিটন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রিয় সাংবাদিক ভায়েরা আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রকৃত ঘটনা জনসম্মুখে তুলে ধরার চেষ্টা করে থাকেন। আপনারা জানেন, গত দুই তিন দিন যাবত একটি স্বার্থম্বেষী মহল প্রচার করছে যে, বেনাপোল পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ট্রাক টার্মিনাল ইজারার অর্থের গড়মিল হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ঘটনার সত্যতা হচ্ছে, পৌরসভার রাজস্ব আয়ের স্বার্থে এবং পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন ভাতা প্রদানের লক্ষে সেবার বিনিময়ে রাস্তা হতে ট্রাক টোল আদায়ের জন্য বাংলা ১৪২৬ সনে ইজারা প্রাদন করা হয় এবং ইজারাদারের দাখিলকৃত দর, ভ্যাট ও আইটিসহ ইজারা মুল্যা ছিল ৫২,১৫,৪৬৭ টাকা। যা ইজারা পরিশোধ করেন এবং টোল আদায় কার্যক্রম চালু করেন।

উল্লেখ্য গত ২৪/০৯/২০১৯ ইং তারিখে বেনাপোল স্থল বন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনায় মাননীয় মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর (এমপি) নির্দেশে বেনাপোল পৌরসভা কর্তৃক সুযোগ সুবিধা প্রদান ব্যতিরেকে ট্রাক হতে যাতে টোল আদায় না করা হয় সে বিষয়ে মেয়র বেনাপোল পৌরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। মন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ট্রাক টোল আদায় বন্ধ হয়ে যায়। পৌর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও ইজারাদারকে টোল আদায় কার্যক্রম বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়। ইজারাদার ক্ষতি পূরণসহ জমাকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য পৌরসভা বরাবরে আবেদন করেন।

বাংলা ১৪২৭ সনের ইজারার সময় চলে আসলে এবং পৌর ট্রাক টার্মিনালের নির্মান কাজ শেষ না হওয়া সত্বেও ট্রাক টার্মিনাল ইজারা দরপত্র আহবানন করা হয়। ইজারায় সর্বোচ্চ দর ছিল ভ্যাট ও আইটিসহ ৫০,৪০,০১২ টাকা। দরদাতা দরপত্র দাখিলের সময় ৩০% সিডি/পে-অর্ডার আকারে ১৭,৬০,০০০ টাকা দাখিল করেন যা পৌর তহবিলে জমা হয়।

মহামরি কোভিড-১৯ এর কারনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রাক টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বাংলা ১৪২৭ সনের ইজারাদারের অনুকুলে পৌর কর্তৃপক্ষ বুঝিয়ে দিতে পারেনি। কিন্তু ১৪২৭ সানে ইজারাদার কর্তৃক ইজারামুল্যের উপর দাখিলকৃত সিডি/পে-অর্ডার এর টাকা পৌর তহবিলে জমা ছিলো।

বাংলা ১৪২৬ এবং ১৪২৭ সনের ক্ষতি পুরণসহ ইজারাদার তাদের টাকা পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট ফেরত চান। সে প্রেক্ষিতে গত ২৯/১০/২০২০ ইং তারিখে পৌর পরিষদের মাসিক সভায় বাংলা ১৪২৭ সনের বাস টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনাল হতে টোল আদায় না হওয়ার বিষয়ে এজেন্ডা ভিত্তিক আলোচনা করা হয়। উক্ত সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাস টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনাল চালু না করতে পারার কারনে ইজারাদারগনের ক্ষতিপুরুণ প্রদানে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সচিব, বেনাপোল পৌরসভাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু সে সময়ও ইজারাদারগন ও সচিবের সাথে সমন্বয় না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ৩১/০১/২০২১ তারিখে পৌরসভার মাসিক সভায় আলোচনা করা হয়। আলোচনার সীদ্ধান্ত মোতাবেক পুনরায় পৌরসভার সচিবকে দ্রুত বাস টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনালের ইজারাদারের সাথে সমন্বয়ের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। গত ১৭/০২/২০২১ তারিখ হাটবাজার নীতিমালা -২০১১ এর ৩.৬ ধারা অনুযায়ী পৌর সচিব এবং বাস ও ট্রাক টার্মিনাল ইজরাদারগনের সাথে আলোচনা ও সমন্বয় হয়।

বাংলা ১৪২৭ সনের পৌর ট্রাক টর্মিনাল ইজারাদার পুনরায় বাংলা ১৪২৮ সনের ইজারা বহাল রাখার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন যে, ১৪২৭ সনের ইজারায় দাখিলকৃত ৩০% অর্থ পৌর তহবিলে এক বছর জমা আছে। সে পেক্ষিতে গত ৩১/০৩/২০২১ তারিখ পৌরসভার মাসিক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৪২৭ সনের ইজারাদারগনের সাথে সমন্বয়কৃত টাকাসহ ইজারাদার বাংলা ১৪২৮ সনের সম্পুর্ন টাকা পৌর তহবিলে জমা করায় পেমেন্ট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য মাননীয় জেলা প্রশাসক যশোর মহোদয় গত ১৪/০৪/২০২১ তারিখ ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যেমে টার্মিনাল এর শুভ উদ্বোধন করেন এবং ১লা বৈশাখ ১৪২৮ সনের ইজারাদার ট্রাক টোল আদায় শুরু করেন।

এ ক্ষেত্রে আমার বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। একটি কু-চক্রিমহল হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।